সুস্বাস্থ্যের
জন্য নিয়মিত হাঁটুন | হাঁটার উপকারিতা সমূহ - স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য নিয়মিত
ব্যায়াম করার কথা বা উপদেশ আমরা সব সময় শুনে থাকি । কিন্তু কি ব্যায়াম করব? এর
জন্য কি জিমনেসিয়ামে যাব নাকি কোনো ক্লাবে? আর ব্যায়াম করবই বা কখন? এরকম নানা
প্রশ্ন আমাদের মনে আসে । এর একটাই ভালো উত্তর হয়, তা হচ্ছে এত কিছু না ভেবে
নিয়মিত হাঁটুন । সপ্তাহে ৫-৬ দিন । আধাঘন্টা হাঁটার মতো ব্যায়াম আর নেই ।
সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত হাঁটুন | হাঁটার উপকারিতা সমূহ |
আরও পড়ুনঃ সজনে পাতার গুনাগুন | সজনে পাতার উপকারিতা
সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত হাঁটুন
রোগ থেকে রক্ষা পেতে বা নিজেকে রোগ মুক্ত রাখতে কে না চায়? আজকের ব্লগ পোস্টে আপনাদেরকে জানাবো সেই কাংক্ষিত নিয়মের কথা । হ্যাঁ আপনি হয়তো বুঝতে পেরে এই আর্টিকেলের হেডিং দেখেই । আপনাদের জানাবো হাঁটার উপকারিতা সমূহ এবং আপনাকে অনুরোধ করবো সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত হাঁটুন । হাঁটার কোনো বিকল্প নেই ।
রোগ
প্রতিরোধে হাঁটা অসাধারণ ভূমিকা পালন করে । আগে থেকে ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকলে
হঠাৎ করে তা শুরু করাও কষ্টসাধ্য । কিন্তু ইচ্ছা করলেই আপনি হাঁটতে পারেন । রোগ
প্রতিরোধ বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলেন, যদি কেউ প্রতিদিন আধাঘন্টা হাঁটেন তাহলে ৩০-৪০
ভাগ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে ।
আপনি
যদি খুব কর্মব্যস্ত মানুষ হন এবং আধাঘন্টা সময় হাঁটার জন্য বের করতে না পারেন
তাহলে কি করবেন? চিন্তার কোন কারণ নেই । দিনে তিন চারবার দশ মিনিট করে হাঁটুন ।
দিনে আধাঘন্টা হাঁটা বা দশ মিনিট করে হাঁটা-যে কোনো একভাবে হাঁটলেই হবে ।
হাঁটার উপকারিতা সমূহ
সুস্বাস্থ্যের
জন্য ও শারীরিক ফিটনেসের জন্য হাঁটার গুরুত্ব অনেক । তাই আমাদের জানতে হবে হাঁটার উপকারিতা
সমূহ কি? আসুন এবার জেনে নেওয়া যাক হাঁটলে আপনি কোন কোন রোগ কিভাবে প্রতিরোধ বা
নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন এবং কিভাবে সুস্থ্য থাকবেন ----
হৃদরোগ
নিয়মিত
হাঁটা হার্টের জন্য খুব ভালো । হাঁটার ফলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং হার্টের
মাংসপেশি ভালো থাকে । তাছাড়া নিয়মিত হাঁটার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে ।
হাঁটার ফলে রক্তে “HDL কোলেস্টেরল”- যাকে আমরা বলি “ভালো কোলেস্টেরল”-তার পরিমাণ
বেড়ে যায় । নিয়মিত হাঁটলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি শতকরা ৫০ ভাগ কমে যায় ।
স্ট্রোক
নানারকম
গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত হাঁটলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে । হার্ভার্ড স্কুল অব
পাবলিক হেলথের ১৪ বছর ব্যাপী এক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, যারা সপ্তাহে ছয়
ঘণ্টা বা তারও বেশি হাঁটেন তাদের শতকরা ৪০ ভাগ স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায় ।
ওজন নিয়ন্ত্রণ
ওজন
নিয়ন্ত্রণে হাঁটার ভূমিকা অনেক । বয়স বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ওজন নিয়ন্ত্রনে
রাখা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে । আধাঘন্টা হাটলে ১০০০ কিলোজুল ক্যালোরি ক্ষয় হয় ।
অনিয়ন্ত্রিত ওজন নানা অসুখের কারণ । নিয়মিত হাঁটার ফলে দেহে অতিরিক্ত চর্বি জমা
হয় না । ওজন কমাতে হলে অবশ্য আধাঘন্টা নয়, প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা হাঁটতে হবে ।
ডায়াবেটিস
গবেষণার
মাধ্যমে প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, নিয়মিত হাঁটলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার
ঝুঁকি কমে যায় । আর ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত হাঁটবেন, কেননা তাতে রক্তের সুগার
নিয়ন্ত্রণে থাকে । আর ডায়াবেটিসের জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণেরও প্রয়োজন, সেটাও
হাঁটার মাধ্যমে সম্ভব ।
অস্টিওপোরেসিস
হাঁটলে
শুধু মাংসপেশি সবল হয় না, সেই সাথে হাড় হয়ে ওঠে শক্তিশালী । পঞ্চাশ বছর বয়সের
পরে মহিলাদের অস্টিওপোরেসিস বা হাড় দুর্বল হয়ে যাবার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায় ।
কিন্তু যে সব অল্পবয়সি মহিলা যারা নিয়মিত ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান ও হাঁটেন
তাদের অস্টিওপোরেসিস হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায় ।
আর্থারাইটিস
আর্থারাইটিস
বা অস্থিসন্ধিতে ব্যথা হলে আমরা আর হাঁটাহাঁটি করতে চাই না । কিন্তু ব্যাপারটা
পুরো উল্টো । মনে করুন আপনার হাঁটুতে ব্যথা, হয়তো তাই আপনি হাঁটাহাঁটি করছেন না,
কিন্তু হাঁটুতে ব্যথা হলে আপনি যদি হাঁটেন তাহলে ব্যথা কমে যাবে । হাঁটলে হাঁটুর
মাংসপেশি সবল হবে এবং ব্যথা কমবে ।
মানসিক অবসাদ
আপনি
যদি মানসিক অবসাদে ভুগে থাকেন তবে অবশ্যই এক বেলা খোলা বাতাসে হাঁটতে বের হবেন ।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবনের পরেও আপনি যদি হাঁটতে বের হন তাহলে দেখবেন
আপনার মন ভাল হয়ে গেছে । আবার ঔষধ সেবন করা শুরু না করেও যদি কেউ নিয়মিত হাঁটতে
শুরু করেন তাহলে ভালো বোধ করবেন । এটি গবেষণায় প্রমাণিত ।
আপনি
আজ থেকে হাঁটা শুরু করলেই যে ভালো বোধ করবেন তা হয়তো নয় । কিন্তু আপনাকে নিয়মিত
হাঁটতে হবে । আর শুরু করতে হবে আজকে থেকেই ।
হাঁটার উপকারিতা নিয়ে প্রশ্নত্তোর
১। প্রশ্নঃ একজন মানুষের কতক্ষণ হাটা উচিৎ?
উত্তরঃ একজন মানুষের দৈনিক আধা ঘন্টা থেকে ৪৫ মিনিট হাঁটা উচিৎ ।
২। হাঁটলে কি কি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়?
উত্তরঃ এক মানুষ যদি নিয়মিত হাঁটে তাহলে বেশ কিছু রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব । যেমন - হৃদরোগ, স্ট্রোক, ওজন নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস, অস্টিওপোরেসিস, আর্থারাইটিস, ও মানসিক অবসাদ ইত্যাদি রোগ থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব ।
বন্ধুরা, আপনাদের সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের ব্লগপোস্ট এখানেই শেষ করছি । আগামীতে যদি এরকম আরো পোস্ট পেতে চান তাহলে আমাদের জিনিয়াস বাংলা ব্লগ এ কমেন্ট করে জানিয়ে দিন । আমরা আমাদের সাধ্যমত আপনাদের চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করব । আল্লাহ হাফেজ ।।
আরও পড়ুনঃ কফির উপকারিতা অপকারিতা