মার্চেন্ডাইজার কি | মার্চেন্ডাইজারের কাজ কি

মার্চেন্ডাইজার কি | মার্চেন্ডাইজারের কাজ কি - বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের অনেক চাহিদা রয়েছে । বর্তমানে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় প্রধান খাত হচ্ছে তৈরি পোশাক বা গার্মেন্টস শিল্প । গার্মেন্টসের তৈরি পন্য বিক্রিতে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কাজ করে থাকে বাইং হাউজ । আর এ প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মার্চেন্ডাইজারা ।

আরও পড়ুনঃ দোভাষী চাকরি | Interpreter job

আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা মার্চেন্ডাইজার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান । আজকের ব্লগ পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো “মার্চেন্ডাইজার কি | মার্চেন্ডাইজারের কাজ কি” বিষয়টি । যারা মার্চেন্ডাইজার বিষয়ে খুটি-নাটি জানতে আগ্রহী তাদের এই পোস্ট কাজে আসবে । তাহলে চলুন জেনে নিই মার্চেন্ডাইজার সম্পর্কে ।

আরও পড়ুনঃ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার উপায় | সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

মার্চেন্ডাইজার কি | মার্চেন্ডাইজারের কাজ কি

আরও পড়ুনঃ গুগল ব্লগ তৈরি করার নিয়ম | কিভাবে ব্লগ তৈরি করা যায়

মার্চেন্ডাইজার কি?

মার্চেন্ডাইজিং (Merchandising) ইংরেজি শব্দ । মার্চেন্ডাইজিং এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে কোন ধরনের পণ্য ক্রয় বিক্রয় করা । অর্থাৎ আয়ের উদ্দেশ্যে যারা কোন ধরনের পণ্য ক্রয় করে এবং তা পরবর্তীতে বিক্রি করে তাদের মার্চেন্ডাইজার বলা হয় । একজন মার্চেন্ডাইজার সাধারণত বায়িং হাউজ বা গার্মেন্টসে কাজ করে থাকেন ।

মার্চেন্ডাইজার হওয়ার যোগ্যতা

মার্চেন্ডাইজার হওয়ার জন্য যে কোন বিষয়ে স্নাতক হলেই চলে । তবে স্নাতক শেষে মার্চেন্ডাইজিং এর উপর কোর্স করা থাকলে কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাওয়া যায় । দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছয় থেকে এক বছর মেয়াদী কোর্স রয়েছে । যে কোর্স করলে আপনি সহজে এই কাজ পেতে পারেন ।

মার্চেন্ডাইজার এর কাজ কি

মার্চেন্ডাইজারদের মূলত দুটি কাজ - কারখানা এবং বাইং হাউজ পরিদর্শন করা । বায়িং হাউজের মার্চেন্ডাইজারা বিদেশী ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করে পণ্য বিক্রির প্রস্তাব দেন এবং বায়ার রাজি হলে কোম্পানির প্রোডাক্ট এর স্যাম্পল দেখেন ।

প্রডাক্ট তৈরিতে কি কি উপকরণ ব্যবহার করা হবে এবং এর মান কতটুকু টেকসই হবে, প্রোডাক্টের সব গুণাগুণ তুলে ধরে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন । পছন্দ হলে দামের বিষয়টি চূড়ান্ত করে চুক্তিপত্র প্রস্তুত করা হয় বা করতে হয় । বায়ারদের চাহিদা অনুযায়ী ফ্যাক্টরিতে পণ্য/প্রোডাক্ট তৈরি থেকে শুরু করে শিপমেন্ট পর্যন্ত পুরো কাজ দেখতে হয় মার্চেন্ডাইজারদের ।

মার্চেন্ডাইজার বেতন

নতুন বা অনভিজ্ঞরা অ্যাসিস্ট্যান্ট মার্চেন্ডাইজার পদে নিয়োগ লাভ করে । যোগ্যতা অনুযায়ী মার্চেন্ডাইজার, সিনিয়র মার্চেন্ডাইজার ও মার্চেন্ডাইজার ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া যায় । 

এছাড়া শুরুতে একজন মার্চেন্ডাইজার ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেতন পান । সিনিয়র মার্চেন্ডাইজার বা মার্চেন্ডাইজার ম্যানেজারের বেতন দুই লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে । এ ধরনের কাজ করার জন্য আপনার অভিজ্ঞতার চেয়ে বড় সম্পদ আর কিছু নেই ।

আরও পড়ুনঃ ব্লগিং করে আয় করার উপায় | ব্লগিং গাইডলাইন

মার্চেন্ডাইজার কি | মার্চেন্ডাইজারের কাজ কি
আরও পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং এর মধ্যে পার্থক্য | ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং কি

মার্চেন্ডাইজার পেশায় সফলতার উপায়

প্রত্যেক পেশায় সফলতার কিছু কৌশল থাকে । যা কোনো একজন ব্যাক্তি তার কর্মজীবনে প্রয়োগ করলে কাংক্ষিত ফলাফল পেতে সক্ষম হন । মার্চেন্ডাইজার পেশাতেও ঠিক তদ্রুপ কিছু সফলতার উপায় রয়েছে । নিম্নে এই পেশার সফলতার কিছু উপায় সমূহ আলোচনা করা হলো ।

ইংরেজি ভাষা জ্ঞান: এ পেশায় ভালো করতে হলে ইংরেজি ভাষা এবং বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে । পাশাপাশি অন্যান্য দেশের ভাষা জানা থাকলে বাড়তি যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয় ।

কাপড় ও এক্সেসরিজ পরিচিতি: কাপড় ও এক্সেসরিজ বায়িং হাউজ বা মার্চেন্ডাইজার সংশ্লিষ্ট । তাই রপ্তানি সংশ্লিষ্ট কাপড় ও এক্সেসরিস সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকাটা জরুরি ।

উৎপাদন প্রক্রিয়া শেষে সরবরাহকারীদের বুকিং: একজন মার্চেন্ডাইজার এর রপ্তানির ক্ষেত্রে বুকিং দেয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা থাকা আবশ্যক ।

কনজাম্পশন এন্ড কস্টিং: গার্মেন্টস এর স্যাম্পল তৈরি করার পর এর মূল্য নির্ধারণ করতে গেলে অবশ্যই পোশাকের মূল্য সম্পর্কে জানতে হবে ।

টার্গেট মার্কেট: টার্গেট মার্কেট বলতে বোঝায় যদি কোনো নির্দিষ্ট একটি বাজারে আপনার পণ্যের চাহিদা থাকে এবং সেখানে আপনি পণ্য রপ্তানি করতে সক্ষম হন । তাহলে সেই বাজারই হল টার্গেট মার্কেট ।

ক্রেতা খোঁজা: বিদেশী বায়ার খোঁজার জন্য আপনি প্রচলিত এবং ডিজিটাল দুই ধরনের পদ্ধতিই অবলম্বন করতে পারেন । সেক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি বেশী কাজ করবে তা বুঝতে হলে এ দুই ধরনের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হবে ।

গ্লোবাল বিটুবি মার্কেট: অনলাইন শো-রুম যেকোনো পণ্যের গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয় । তাই গ্লোবাল বিটুবি মার্কেটপ্লেস এ প্রবেশ করুন ।

ট্রেড ফেয়ার বা বাণিজ্য মেলা: বৈদেশিক নানাবিধ মেলায় আপনার পণ্যকে তুলে ধরুন । এটি কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে জানান । যা আপনাকে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হতে সাহায্য করবে ।

মার্চেন্ডাইজার কোথায় পড়বেন

আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা মার্চেন্ডাইজার পেশায় আগ্রহী এবং এই বিষয়ে কোথায় কোর্স করা যায় তা জানতে চান । কোথায় মার্চেন্ডাইজার বিষয়ে কোর্স করবেন সে বিষয়ে আলোচনা করা হলো ।

বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি: এটি বাংলাদেশের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় । এখানে নেটওয়ার্ক মার্চেন্ডাইজিং, নীটওয়্যার গার্মেন্টস মার্চেন্ডাইজিং ও সোয়েটার মার্চেন্ডাইজিং বিষয়ে এক বছর মেয়াদি স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট কোর্স করা যায় ।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন টেকনোলজি: এখানে ফ্যাশন ডিজাইন, অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং, প্যাটার্ন মেকিং, গার্মেন্টস সিআইডি ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, ইন্টেরিয়র ডিজাইন, লেদার ডিজাইন, কম্পিউটার ফান্ডামেন্টাল এন্ড অপারেশন ইত্যাদি কোর্স করা যায় ।

মার্চেন্ডাইজারস ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন টেকনোলজি: এ প্রতিষ্ঠানে যেকোনো বয়সের শিক্ষার্থীরা সাধারণ পড়াশোনার পাশাপাশি মার্চেন্ডাইজিং, ফ্যাশন ডিজাইন, প্যাটার্ন ডিজাইন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন ।

শান্ত-মরিয়ম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি: শান্ত-মরিয়ম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজিতে ফ্যাশন ডিজাইন, অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিংয়ের কোর্স করা যায় ।


আরও পড়ুনঃ SEO কাকে বলে | SEO কিভাবে কাজ করে

Previous Post Next Post