ব্লগিং করে আয় করার উপায় | ব্লগিং গাইডলাইন

ব্লগিং করে আয় করার উপায় | ব্লগিং গাইডলাইন - যারা অনলাইনে নতুন এসেছেন অনলাইন থেকে উপার্জন করার জন্য, আর সেক্ষেত্রে হয়তো আপনি ব্লগিংকেই বেছে নিয়েছেন । আপনি হয়তো চিন্তা করছেন এবং সংকল্পবদ্ধ হয়েছেন যে একটি ব্লগ সাইট অথবা ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখান থেকে অর্থ উপার্জন করবেন । আজকের ব্লগ পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো “ব্লগিং করে আয় করার উপায় | ব্লগিং গাইডলাইন” বিষয় নিয়ে ।

আরও পড়ুনঃ ছাত্র অবস্থায় ইনকাম | ছাত্র জীবনে অর্থ উপার্জন

ব্লগিং করে আয় করার উপায় | ব্লগিং গাইডলাইন

আরও পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং এর মধ্যে পার্থক্য | ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং কি

বন্ধুরা, আপনার মধ্যে যদি লেখার সুপ্ত প্রতিভা থাকে, আপনি যদি লেখালেখিতে অনেক পারদর্শী হন তাহলে আপনার সেই সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের জন্য ব্লগ একটি আদর্শ স্থান । এক কথায় বোঝানো যেতে পারে যে, আপনার নতুন এবং ইউনিক কিছু লেখার ক্ষমতা আছে । সেক্ষেত্রে ব্লগিং করে আপনি দীর্ঘ সময় এই লাইনে টিকে থাকতে পারবেন ।

আর যদি মনে করেন যে, আপনার মধ্যে সেই গুন বা ক্ষমতা নেই তাহলে মিছেমিছি এই লাইনের সময় ব্যয় করবেন না । কপি পেস্ট করে বেশিদিন টিকে থাকতে পারবেন না । আমার পরামর্শ থাকবে, যে লাইনে আপনি পারদর্শী সেই লাইনে চেষ্টা করুন । ইনশাআল্লাহ সফল হবেন ।

তবে হ্যাঁ অন্যান্য ব্লগ সাইট থেকে ধারনা নিতে পারবেন । এখন চিন্তাকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য ব্লগিং এর সুবিধা গুলো আপনার জানা আবশ্যক । এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্লগিং এর সুবিধা সমূহ ।

ব্লগ অর্থ কি

ব্লগ হলো ইন্টারনেট বা অনলাইন ভিত্তিক ব্যক্তি কেন্দ্রিক পত্রিকা । ওয়েবব্লগের সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে ব্লগ । যিনি ব্লগ পরিচালনা করেন বা নিয়মিত পোস্ট করেন তাকে ব্লগার বলা হয়ে থাকে ।

ব্লগ বিভিন্ন বিষয়ে হয় বা হয়ে থাকে । ব্লগ হল বিভিন্ন প্রকার লেখা, ছবি, অন্য ব্লগ, ওয়েব পেজ এবং এ বিষয়ে অন্য ব্লগের লিংক ইত্যাদির সমাহার । ব্লগে পাঠকরা তাদের মন্তব্য করার সুযোগ পেয়ে থাকেন । ব্লগগুলো মূলত লেখা ভিত্তিক হয়ে থাকে । মোট কথা ব্লগার যে বিষয়ে পারদর্শি সে সেই বিষয় নিয়ে তার ব্লগে নিয়মিত লিখতে পারেন ।

ব্লগ ও ব্লগার কি

ব্লগ হল একটি প্লাটফর্ম । যেমন – গুগল এর ব্লগার ডট কম, ওয়াটপ্রেস ডট কম ইত্যাদি । আর যিনি ব্লগ পরিচালনা করে থাকেন এবং ব্লগে নিয়মিত লেখা ও অন্যান্য বিষয়বস্তু পোস্ট করে থাকেন তাকেই ব্লগার বলা হয় ।

ব্লগ থেকে কি ধরনের আয় হয়

আপনার ব্লগ থেকে আপনি বিভিন্ন উপায়ে আয় করতে পারেন । প্রথমত আপনি আপনার ব্লগটিকে বিভিন্ন প্রকার এ্যাড নেটওয়ার্কের আওতায় এনে এ্যাড মনিটাইজ করে আয় করতে পারেন । এই এ্যাড নেটওয়ার্কের মধ্যে সেরা হচ্ছে গুগল এ্যাডসেন্স । 

এর অর্থ হচ্ছে গুগল আপনার সাইটে বিজ্ঞাপন প্রদান করবে এবং সেখান থেকে একটি নির্দ্দিষ্ট পরিমান অর্থ প্রতি মাসে আপনি পাবেন । অনেক ব্লগার আছেন যারা তাদের ব্লগ থেকে হিউজ পরিমান অর্থ উপার্যন করে থাকেন ।

এছাড়াও আরও অনেক নিয়মে এখান থেকে অর্থ উপার্যন সম্ভব । যেমন ---

  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং,
  • ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রোডাক্টের অফার,
  • কোচিং,
  • প্রডাক্ট রিভিউ ইত্যাদি ।

ব্লগিং এর সুবিধা সমূহ

আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা ব্লগ এবং ব্লগিং এর সুবিধা সমূহ জানতে চেয়ে থাকেন । যারা নতুন এই লাইনে আসছেন তারাই মূলত যানতে চান । এখানে ব্লগিং এর ১০টি সুবিধার কথা নিচে আলোচনা করা হল ----

ঘরে বসেই অর্থ আয় করুন

ব্লগিং-এর সবথেকে বড় সুবিধা হল আপনি ঘরে বসেই আপনার কম্পিউটারের মাধ্যমে এই কাজটি করতে পারবেন । এই কাজ করতে আপনাকে কোথাও যেতে হবে না । অর্থাৎ বাড়ি বসেই আপনি ব্লগিং করে বাড়িতে বসেই অর্থ উপার্জন করতে পারবেন । 

যারা চাকরি করেন, তাদের রোদ, বৃষ্টি বাড়িতে অফিসে সময় মত যেতেই হয় । আপনি যদি ব্লগিং শুরু করেন তাহলে আপনার কোথাও যাওয়ার দরকার নেই । ঘরে বসেই আপনি আপনার ইচ্ছামত উপার্জন করতে পারবেন ।

নিজেই যখন নিজের বস

ব্লগিংয়ের সুবিধা হলো আপনার কোনো অতিরিক্ত কাজের প্রেসার নেই । আপনি নিজেই আপনার বস । অর্থাৎ আপনার সুবিধামতো আপনি কাজ করবেন । ফ্রিল্যান্সিংয়ের অন্য অনেক সাইট আছে যে গুলোতে রাত জেগে কাজ করতে হয় । কিন্তু ব্লগিংয়ের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন । 

আপনার শুধু টার্গেট থাকবে কিভাবে আপনি আপনার ব্লগ সাইটকে একটি আদর্শ ব্লগসাইটে পরিণত করতে পারবেন । এক কথায় বলা যায় ধরাবাঁধা কাজের গণ্ডির বাইরে ব্লগ ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য একটি আদর্শ স্থান ।

নিজের মত করে কাজ করা

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা চাকরি করেন । আপনি হয়তো বা দেখে থাকবেন তাদের কোন নিজস্ব স্বাধীনতা নাই । তারা ইচ্ছামত ঘুরতেও পারেনা, বন্ধুদের সাথে সময় দিতে পারে না । সব সময় চাকরির দিকে নজর দিতে হয় । কিন্তু ব্লগিংয়ের ক্ষেত্রে এমনটি হয় না । 

আপনি যদি আপনার বন্ধু অথবা পরিবারের সাথে কোথাও ভ্রমন করতে চান, তাহলে আপনাকে কারোর কাছে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই । আপনি যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারেন । এতে আপনার অর্থ উপার্জনের কোন সমস্যা হবে না ।

কোন প্রকার বিনিয়োগ এর দরকার নেই

আপনি হয়তো ব্যবসার কথা চিন্তা ভাবনা করছেন । যে কোন ব্যবসার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হয় । একজন সাধারন মানুষের পক্ষে এত টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব নয় । আপনি ব্যবসা করার লক্ষ্যে টাকা সংগ্রহ করলেন ঠিকই কিন্তু ব্যবসাটি সঠিক ভাবে চলবে কিনা তারও কোন গ্যারান্টি নাই । 

ব্লগিংয়ের ক্ষেত্রে এমন কোন বিনিয়োগের দরকার নেই । আপনি বিনিয়োগ ছাড়াই ব্লগিং থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন । বর্তমানে অনেক ব্লগার আছেন যারা ব্লগিং করে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছেন ।

ব্লগিংয়ের কাজে পূর্ন স্বাধীনতা

আমরা সবাই কোন কাজ করার পূর্বে এমন ধরনের কাজ খুঁজে থাকি যেখানে নিজস্ব স্বাধীনতা পাওয়া যায় । আর ব্লগিং এমন একটি পেশা যেখানে সকল ব্লগারের নিজস্ব স্বাধীনতা রয়েছে । এটা অনেকটা পার্ট টাইম কাজের মতো । 

একজন ব্লগার চাইলে যে কোনো সময় যে কোনো স্থান থেকে তার কাজ করতে পারে । কারণ এই কাজটি সম্পূর্ণ তার নিজস্ব । তাই এখানে যথেষ্ট পরিমাণ কর্মস্বাধীনতা থাকার কারনে সারা বিশ্বে আজ ব্লগিং প্রচুর জনপ্রিয় । প্রতি নিয়ত দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে । এক দিকে রয়েছে কাজ করার স্বাধীনতা অন্যদিকে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার অফুরান্ত সুযোগ ।

ব্লগ-এর র‌্যাংক বা প্রসার

ব্লগ বা ওয়েবসাইটের সব সময় র‌্যাংকিং-এর প্রমোশন হয় । ভিজিটরদের একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জীবন বলা হয় । আপনার ওয়েবসাইটের মধ্যে যে সকল পোস্ট গুলো পাব্লিশ করা হবে সেই পোস্টগুলো যতদিন যাবে ততই গুগলে র‌্যাংক হতে থাকবে । 

আর পোস্ট যত বেশি র‌্যাংক হবে তত বেশি গুগল থেকে ভিজিটর আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবে । আবার যত বেশি অর্গানিক ভিজিটর আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে ভিজিট করবে, আপনার উপার্জন দিন দিন তত বাড়তে থাকবে । আপনি দিন দিন সফলতার দিকে অগ্রসর হবেন । হবেন আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বি ।

জনপ্রিয়তা লাভ

আপনার তৈরীকৃত ব্লগসাইটি যদি মানুষের মাঝে জনপ্রিয় হয় বা পরিচিতি লাভ করে তখন মানুষ আপনাকে একজন ভালো ব্লগার হিসেবে চিনবে । এখানে আপনি যখন জনপ্রিয়তা পাবেন অর্থাৎ মানুষ আপনাকে একজন সফল ব্লগার হিসেবে জানবে । 

আপনি যদি সবার কাছে একজন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত হতে পারেন তাহলে আপনার টাকা চারদিক থেকেই আসা শুরু হবে । কারণ তখন আপনি নানা ধরনের স্পনসর্শিপ নিতে পারবেন । এছাড়াও আপনাকে মানুষ চেনার কারণে আরও বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন যা আপনার জন্য অনেক লাভজনক হবে । আমাদের দেশেই এর অজস্র উদাহরন রয়েছে ।

জ্ঞানের প্রসারতা বৃদ্ধি

ব্লগিং এর মাধ্যমে আপনার জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে । ব্লগিং শুরু করার পর থেকেই লিখতে লিখতে নানান বিষয়ের উপর আপনার জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে । কারণ আপনি যখন আপনার ব্লগসাইটের মধ্যে কোনো বিষয়ের ওপর একটি কনটেন্ট বা আর্টিকেল পাবলিশ করার জন্যে লেখা শুরু করবেন, তখন আপনাকে সেই বিষযয়ের উপর অনেক রিসার্চ করতে হবে এবং বিষয়গুলো সাজিয়ে-গুছিয়ে একটি কন্টেন্ট লিখতে হবে । 

এতে করে দিন দিন আপনি বিভিন্ন বিষয়ের উপর দক্ষ হয়ে উঠবেন । যা আপনাকে আরও সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রেরনা যোগাবে । আপনি যখন নিজ থেকে ব্লগিং শুরু করবেন তখন সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন ।

মত প্রকাশের স্বাধীনতা

আমরা যারা ব্লগিং করে থাকি, তারা এই ব্লগ এর মাধ্যমে নিজস্ব মতামত- চিন্তা ধারা প্রকাশ করতে পারি । ব্লগিং এমনই একটি মাধ্যম, যার সাহায্যে আমাদের নিজস্ব চিন্তা কে সমগ্র বিশ্বের সামনে তুলে ধরার স্বাধীনতা রয়েছে । আমরা ব্লগিংয়ের মাধ্যমে আমাদের নিজস্ব মতামত অন্যদের সামনে প্রকাশ করতে পারি । 

ব্লগিংয়ের মাধ্যমে আমরা নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচিতি লাভ করতে পারি । আমরা আমাদের জ্ঞান- ধারণাকে অন্যান্য মানুষের সাথে ভাগাভাগি করতে পারি । অতএব একথা বলাই যায় যে এখানে মত প্রকাশের কোনো বাধা নেই, আপনি নিশ্চিন্তে আপনার মতামত প্রকাশ করতে পারবেন সারা বিশ্ববাসীর সামনে ।

একাধিক আয়ের এর উৎস

ব্লগিংয়ের মাধ্যমে আপনি শুধুমাত্র ব্লগ লিখে নয়, এখান থেকে বিভিন্ন ভাবে ইনকাম করতে পারবেন । যেমন - এডসেন্স এর মাধ্যমে, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে, রিভিউ পোস্ট লেখার মাধ্যমে ইত্যাদি ইত্যাদি । সুতরাং আপনি চাইলেই আপনার ব্লগ সাইট থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন । এবার সিদ্ধান্ত নিন আপনি কীভাবে এই ব্লগ থেকে অর্থ উপার্জন করবেন ।

শেষ কথা

ব্লগিং করে অনেক মানুষ আজ স্বাবলম্বী । অনেকেই প্রচুর অর্থও উপার্যন করছে । আপনিও যদি নিজের প্রতিভা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চান তবে ব্লগিং-এর বিকল্প নেই । আপনার দরকার শুধুমাত্র ধৈর্য্য । 

সাফল্যের চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছনোর জন্য অবশ্যই আপনাকে অনেক ধর্য্য ধারন করতে হবে । আপনি যদি মনে করেন আজই একটি ব্লগ সাইট খুলেছেন এবং কাল থেকেই ইনকান করবেন তাহলে ভুল করবেন । শেখার কোনো শেষ নেই । আস্তে আস্তেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেন এটাই সাধারণ নিয়ম ।

আপনাদের প্রতি আমার একটাই অনুরোধ, কোনো বিষয় হয়তো আপনি বুঝতে পারছেন না তাহলে সেই বিষয়ে রিসার্চ করুন, সেক্ষেত্রে গুগলের সাহায্য নিতে পারেন । যত বেশি রিসার্চ করবেন ততই জানবেন । রিসার্চের কোনো বিকল্প নেই । আপনাদের সফলতা কামনা করে শেষ করছি । আল্লাহ হাফেজ ।


আরও পড়ুনঃ SEO কাকে বলে | SEO কিভাবে কাজ করে

Previous Post Next Post