মেট্রোরেল বাংলাদেশ | মেট্রোরেল তথ্য

মেট্রোরেল বাংলাদেশ | মেট্রোরেল তথ্য - ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ সালে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের গণপরিবহনে যুক্ত হয় বৈদ্যুতিক মেট্রোরেল । বাংলাদেশে বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল প্রথম বাণিজ্যিক চলাচল শুরু হয় । যানজটের কারণে যখন রাজধানীবাসীর নাকাল হওয়ার দশা, তখন যেন স্বস্তির শীতল হাওয়া দিচ্ছে স্বপ্নের মেট্রোরেল । দেশের অন্যতম এ মেগা প্রকল্প মেট্রোরেল নিয়ে আমাদের বিশেষ আয়োজন ।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের জাতীয় বিষয় সমূহ | National affairs of Bangladesh

মেট্রোরেল বাংলাদেশ | মেট্রোরেল তথ্য

আরও পড়ুনঃ বাংলার নবাবী আমল | Nawab period of Bengal

আজকের ব্লগ পোস্টে মেট্রোরেল বাংলাদেশ | মেট্রোরেল তথ্য এবং বাংলাদেশের গণপরিবহনে যুক্ত হওয়া বৈদ্যুতিক মেট্রোরেলের বিস্তারিত নিয়ে আলোচনা করবো । যারা বাংলাদেশের মেট্রোরেল নিয়ে জানতে আগ্রহী তাদের আশা করি এই আর্টিকেলটি ভালো লাগবে ।

মেট্রোরেল

মেট্রোপলিটন রেল-এর সংক্ষিপ্ত রূপ হল মেট্রোরেল । মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো স্পর্শ করে গণপরিবহনের জন্য প্রতিষ্ঠিত রেল ব্যবস্থাই হলো মেট্রোরেল । একে র‌্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেমও বলা হয় । এটি একটি বিদ্যুৎচালিত, দ্রুতগামী, স্বাচ্ছন্দময় ও নিরাপদ নগরকেন্দ্রিক রেল ব্যবস্থা । আধুনিক নগর পরিকল্পনায় ও যানজট নিরসনে বিপুল সংখ্যক যাত্রী দ্রুত পরিবহনে সবথেকে কার্যকর মাধ্যম এই মেট্রোরেল ।

মেট্রোরেলের ইতিহাস

১৮৬৩ সালে লন্ডনে প্রথম দ্রুত ট্রানজিট রেল ব্যবস্থা চালু করা হয়, যা এখন লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড এর একটি অংশ । ১৮৬৮ সালে নিউইয়র্কে প্রথম দ্রুত ট্রানজিট রেলব্যবস্থা চালু হয় । ১৯০৪ সালে নিউইয়র্ক সিটি সাবওয়ে প্রথমবারের জন্য উন্মুক্ত করা হয় । এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে জাপান প্রথম ১৯২৭ সালে পাতাল রেলব্যবস্থা তৈরি করে । ১৯৭২ সালে ভারত কলকাতায় মেট্রোরেল নির্মাণ শুরু হয় । বর্তমান বিশ্বের ৫৬ টি দেশের ১৭৮ টি শহরে ১৮০ টি দ্রুত ট্রানজিট রেলব্যবস্থা চালু রয়েছে ।

বাংলাদেশ মেট্রোরেল

বাংলাদেশে মেট্রোরেল সম্পূর্ণরূপে একটি নতুন ধারণা । যানজট নিরসন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন এর লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার তৈরি করে “ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথোরিটি” । ঢাকায় নির্মানাধীন শহরভিত্তিক রেল ব্যবস্থা হচ্ছে ঢাকা মেট্রোরেল যা আনুষ্ঠানিকভাবে “ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট” বা এমটিআর (MRT) নামে পরিচিত ।

২০১৩ সালে কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়, যার অধীনে প্রথমবারের মতো ঢাকায় মেট্রোরেল স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয় । পরবর্তীতে ২০১৬ সালে প্রণীত সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা অনুসারে ঢাকায় নির্মিতব্য মেট্রোরেলের লাইনের সংখ্যা ৩টি থেকে বাড়িয়ে ৫টি করা হয় । ঢাকা মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (DMTCL) । এটি ৩ জুন ২০১৩ প্রতিষ্ঠা করা হয় । এটি সম্পূর্ণ সরকারি মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান ।

মেট্রোরেল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান

মেট্রোরেলের ২৪ সেট ট্রেনের নকশা প্রণয়ন ও তৈরীর দায়িত্বে রয়েছে জাপানের কাওয়াসাকি-মিৎসুবিশি কনসোর্টিয়াম । ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ DMTCL এবং কাওয়াসাকি-মিৎসুবিশি কনসোর্টিয়াম এর মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় । ৬ টি কোচ নিয়ে একটি ট্রেন সেট গঠিত । ২১ এপ্রিল ২০২১ জাপান থেকে মেট্রোরেলের প্রথম সেট বাংলাদেশে পৌঁছে । মেট্রোরেল ও লাইনের নকশা অনুযায়ী এটি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে ।

মেট্রোরেল বাংলাদেশ | মেট্রোরেল তথ্য
মেট্রোরেল বাংলাদেশ

মেট্রোরেল প্রকল্পসমূহ

DMTCL এর আওতায় মেট্রোরেলের মোট দৈর্ঘ্য ১২৯.৯০১ কিলোমিটার (উড়াল ৬৮.৭২৯ কিলোমিটার ও পাতাল ৬১.১৭২ কিলোমিটার) এবং স্টেশন ১০৫ টি । এ লক্ষ্যে সরকার ২০৩০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদী একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ।

লাইন রুট দৈর্ঘ্য (কিমি) স্টেশন ধরন সমাপ্তি
এমটিআর - ১* - ৩১.২৪ ২১টি উড়াল-পাতাল ২০২৬ সাল
এমটিআর - ২ গাবতলী-চট্টগ্রাম রোড ২৪ - উড়াল-পাতাল ২০৩০ সাল
এমটিআর - ৩ কমলাপুর-নারায়নগঞ্জ ১৬ - উড়াল ২০৩০ সাল
এমটিআর - ৪ হেমায়েতপুর-ভাটরা ২০ ১৪টি উড়াল-পাতাল ২০২৮ সাল
এমটিআর - ৫ গাবতলী-দাশেরকান্দি ১৭.৪০ ১৫টি উড়াল-পাতাল ২০৩০ সাল
এমটিআর - ৬ উত্তরা-কমলাপুর ২১.২৬ ১৭টি উড়াল ২০১৫ সাল

* এ লাইনের অধীনে দুইটি রুট হবে । বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রুটটি বিমানবন্দর রুট, যার দৈর্ঘ্য ১৯.৮৭২ কিলোমিটার এবং নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত পূর্বাচল রুট, যার দৈর্ঘ্য ১১.৩৬৯ কিলোমিটার ।

ঢাকায় প্রথম মেট্রোরেল

মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত পথটি “এমআরটি লাইন-৬” নামে পরিচিত । এটি ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল । ১৮ ডিসেম্বর ২০১২ প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন লাভ করে । ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৩ জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার সাথে বাংলাদেশ সরকার এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে ।

এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৩৩,৪৭১,৯৯ কোটি টাকা । উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা Japan International Cooperation Agency (JICA) এ প্রকল্পে সহায়তা দেবে ১৯,৭১৮,৪৭ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার দিবে ১৩,৭৫৩,৫২ কোটি টাকা ।

২৬ জুন ২০১৬ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ কাজের উদ্বোধন করেন । মেট্রোরেলের ৬ কোচ বিশিষ্ট ২৪ সেট ট্রেনে যাত্রী পরিবহন ক্ষমতা থাকবে ঘন্টায় ৬০,০০০ ও দৈনিক ৫ লক্ষ । তবে ভবিষ্যতে এটিকে ৮ কোচে উন্নত করা যাবে ।

মাঝের ৪টি কোচে প্রতিটিতে যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা হবে সর্বোচ্চ ৩৯০ জন এবং ট্রেইলার কোচের প্রতিটিতে সর্বোচ্চ ৩৭৪ জন আর ট্রেন প্রতি সর্বোচ্চ যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা ২,৩০৮ জন ।

উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত স্টেশনের সংখ্যা ১৭ টি । স্টেশনসমূহ: উত্তরা-উত্তর, উত্তরা-সেন্টার, উত্তর-দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, মতিঝিল ও কমলাপুর ।

এমআরটি লাইন-৬ সংশোধিত বাস্তবায়ন পরিকল্পনা: ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৬) বা বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেল ২০১২-২০২৪ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয় । মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিশেষ উদ্যোগে নির্ধারিত সময়ের ২ বছর ৬ মাস পূর্বে বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেল চালুর সংশোধিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় ।

প্রথম ধাপে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চলবে । এ অংশের মোট দৈর্ঘ্য ১১.৭৩ কিলোমিটার এবং স্টেশন রয়েছে ৯টি । ১০টি ট্রেন দিয়ে এ অংশে শুরু হবে যাত্রী পরিবহন ।

ভোর ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ৪ মিনিট অন্তর চলাচল করবে । ট্রেনগুলো প্রতিটি স্টেশনে থামবে ৪৫ সেকেন্ডের জন্য । আগারগাঁও পর্যন্ত ভ্রমণ করা যাত্রীদের মতিঝিল পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য রাখা হবে “শাটল বাস” । একইভাবে শাটল বাস রাখা হবে উত্তরা নর্থ স্টেশন থেকেও ।

মেট্রোরেলের বিদ্যুৎ

মেট্রোরেলের বিদ্যুৎ আসবে সরাসরি জাতীয় গ্রিড থেকে । এজন্য উত্তরা ও মতিঝিলে দুটি ১৩২ কেভি উপকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে । উত্তরা - আগারগাঁও পর্যন্ত ৮০ মেগাওয়াট আর আগারগাঁও - কমলাপুর পর্যন্ত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের যোগান থাকবে ।

মেট্রোরেলের ভাড়া

মেট্রোরেলে প্রতি কিলোমিটার ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ টাকা । আর সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা ও সর্বোচ্চ ভাড়া ১০০ টাকা । তবে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাড়া মওকুফ থাকবে । মেট্রোরেলে মাসিক, সাপ্তাহিক, পারিবারিক এবং কার্ডে ভাড়া দেওয়ার বিশেষ সুবিধা থাকবে ।

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিরা প্রতিবার ভ্রমণে বিশেষ ছাড় পাবেন । ভাড়া স্মার্ট কার্ডে পরিশোধ করলে ১০% রেয়াতের ব্যবস্থা থাকবে । রেলের চলাচলের ক্ষেত্রে সাপ্তাহিক, মাসিক, পারিবারিক কার্ড আগে থেকে কিনতে হবে । এছাড়া যে কোন স্টেশনে থাকা মেশিনের মাধ্যমে কার্ড রিচার্জ করা যাবে ।

মেট্রোরেল বাংলাদেশ | মেট্রোরেল তথ্য
মেট্রোরেলের সুবিধা

মেট্রোরেলের সুবিধা

ঢাকা শহরের মতো জনবহুল ও যান জটের শহরে মেট্রোরেল যেন নগরবাসীর জন্য এক আশীর্বাদ । মেট্রোরেলের কারণে ঢাকাবাসী নিম্নোক্ত সুবিধা গুলো উপভোগ করবে ---

|| বিপুল সংখ্যক লোক খুব সহজে এবং দ্রুত এক স্থান থেকে অন্যত্র ভ্রমণ করতে পারবে ।

|| সম্পূর্ণ যানজট বিহীন একটি পরিবহন ব্যবস্থার উদ্ভাবন ঘটবে ।

|| যাতায়াতের সুবিধার জন্য মূল ঢাকার বসবাসের জন্য চাপ কমবে ।

|| এতে শব্দ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকায় যাত্রীরা একটি শব্দ দূষণ মুক্ত পরিবেশে ভ্রমণ করতে পারবে ।

|| মেট্রোরেল হাজার হাজার কর্মঘন্টা সাশ্রয় করবে, যে সময় উন্নয়নশীল কাজে ব্যয় করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখা যাবে ।

|| অন্যান্য পরিবহনের চেয়ে নিরাপদ ও সর্বনিম্ন দুর্ঘটনার যোগাযোগ মাধ্যমে পরিণত হবে মেট্রোরেল ।

|| মেট্রোরেল ব্যবহারের কারণে রাস্তার যানজটের চাপ কমবে, এতে ঢাকা শহর আগের থেকে আরও বাসযোগ্য হয়ে উঠবে ।

|| মেট্রোরেল চালু হওয়ার ফলে ছোট ছোট যানবাহনের ব্যবহার ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে । জীবাশ্ম ও তরল জ্বালানি ব্যবহার বহুলাংশে হ্রাস পাবে । এতে বায়ুদূষণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে যাবে ।

অর্থনৈতিক প্রভাব

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু । দেশের সম্পূর্ণ জিডিপিতে অবদান প্রায় ৩৬ শতাংশ । ৩০ জুন ২০২২ পর্যন্ত ঢাকায় নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ১৮,৭৭,৪৭৪ টি । ঢাকা মহানগরীর সড়ক ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৬.১২ কিমি ।

এতে মহানগরীর যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে । এই যানজট ও এর ফলশ্রুত প্রভাব বার্ষিক প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হচ্ছে । মেট্রোরেল চালুর ফলে যানজট ও এর ফলশ্রুতিতে যে ক্ষতি হচ্ছে তা সাশ্রয় হবে ।

এছাড়া মেট্রোরেলকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন এলাকায় অনেক নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও নতুন আবাসন গড়ে উঠছে । এতে অসংখ্য মানুষ এর নতুন কর্মস্থল তৈরি হবে ।

মেট্রোরেল ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

সরকারের সময়বদ্ধ পরিকল্পনা ২০৩০ অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ জেলাকে মেট্রোরেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হবে । ২০৩০ পরবর্তী প্রথম পর্যায়ের পরিকল্পনায় গাজীপুর জেলাকে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ জেলাকে মেট্রোরেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে ।

সরকারের সময়বদ্ধ পরিকল্পনা ২০৩০ পরবর্তী পরিকল্পনা মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ঢাকা মহানগরীর সঙ্গে ঢাকা জেলার পার্শ্ববর্তী ৫টি জেলাকে মেট্রোরেল নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করা ।

মেট্রোরেল নগরবাসীকে খুব কম সময়েই গন্তব্যে পৌঁছে দেবে এবং একই সাথে নগরজীবনে ভিন্ন মাত্রা ও গতি যোগ করবে । মানুষের জীবন যাত্রার মান যেমন উন্নয়ন হবে তেমনি ঢাকার মর্যাদাও বেড়ে যাবে । যোগাযোগের নতুন সূচকে ঢাকা এগিয়ে যাবে অপ্রতিরোধ্য গতিতে । মেট্রোরেল বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতিকে পৌঁছে দেবে এক অনন্য উচ্চতায় ।

মেট্রোরেল সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন: MRT এর পূর্ণরূপ কি?

উত্তর: Mass Rapid Transit ।

প্রশ্ন: মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে কোন প্রতিষ্ঠান?

উত্তর: ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (DMTCL) ।

প্রশ্ন: DMTCL কার মালিকানাধীন?

উত্তর: বাংলাদেশ সরকার ।

প্রশ্ন: DMTCL এর আওতায় মেট্রো রেলের মোট দৈর্ঘ্য কত?

উত্তর: ১২৯.৯০১ কিমি ।

প্রশ্ন: মোট স্টেশন হবে কয়টি?

উত্তরঃ ১০৫ টি ।

প্রশ্ন: প্রথম পর্যায়ে কোন রুটের কাজ শেষ করা হবে?

উত্তর: এমআরটি লাইন – ৬ ।

প্রশ্ন: দ্বিতীয় পর্যায় কোন রুটের কাজ শেষ করা হবে?

উত্তর: এমআরটি লাইন-১ ও এমআরটি লাইন-৫ (Northren Route) ।

এমআরটি লাইন-৬

প্রশ্ন: দেশের প্রথম মেট্রোরেল চালু হয় কোন লাইনে?

উত্তরঃ এমআরটি লাইন – ৬ ।

প্রশ্ন: নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হয় কবে?

উত্তর: ২৬ জুন ২০১৬ ।

প্রশ্ন: দেশের প্রথম মেট্রোরেলের আনুষ্ঠানিক পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয় কবে?

উত্তর: ২৯ আগস্ট ২০২১ ।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ বিদ্যুৎ চালিত মেট্রোরেল ব্যবস্থার যুগে প্রবেশ করে কবে?

উত্তর: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ।

প্রশ্ন: প্রথম যাত্রী হিসেবে টিকিট কেটে ট্রেনে চলেন কে?

উত্তর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।

প্রশ্ন: সাধারণ যাত্রীদের জন্য মেট্রোরেল উন্মুক্ত করা হয় কবে?

উত্তর: ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ ।

প্রশ্ন: একনেকে অনুমোদন হয় কবে?

উত্তর: ১৮ ডিসেম্বর ২০১২ ।

প্রশ্ন: কোচগুলোর নির্মাতা কে?

উত্তর: জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়াম ।

প্রশান: স্টেশন কয়টি ও কি কি?

উত্তর: ১৭ টি । যথা -- উত্তরা-উত্তর, উত্তরা-সেন্টার, উত্তর-দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, মতিঝিল ও কমলাপুর ।

প্রশ্ন: নারী যাত্রীদের জন্য বিশেষ কি সুবিধা থাকবে?

উত্তর: প্রতিটি ট্রেনে একটি করে কোচ শুধু নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে । নারী যাত্রীগণ ইচ্ছা করলে অন্য কোচেও যেতে পারবে ।

প্রশ্ন: ঢাকার উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত প্রথম মেট্রোরেল (এমআরটি লাইন ৬) এর দৈর্ঘ্য কত?

উত্তর ২১.৬ কিমি ।

প্রশ্ন: ঢাকার উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রথম মেট্রোরেল (এমটিআর ৬) এর দৈর্ঘ্য কত?

উত্তর ২০.১০ কিমি ।

প্রশ্ন: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ কোন স্থান থেকে কোন স্থান পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হয়?

উত্তর: উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে ।

প্রশ্ন: এ অংশের দৈর্ঘ্য কত?

উত্তর: ১১.৭৩ কিমি ।

প্রশ্ন: এ অংশের স্টেশন কতটি?

উত্তর: ৯টি ।

প্রশ্ন: আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ কবে চালু হবে?

উত্তর: ২০২৩ সালের শেষের দিকে ।

প্রশ্ন: এ অংশের দৈর্ঘ্য কত?

উত্তর: ৮.৩৭ কিমি ।

প্রশ্ন: এ অংশের স্টেশন কতটি?

উত্তর: ৭টি ।

প্রশ্ন: মতিঝিল থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত কবে চালু হবে?

উত্তর: ২০২৫ সালে:

প্রশ্ন: এ অংশের দৈর্ঘ্য কত:

উত্তর: ১.১৬ কিমি ।


এই রকম আরো পোস্ট পেতে চাইলে “জিনিয়াস বাংলা ব্লগ” এর কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে আমাদের জানিয়ে দিন । আমরা আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী লেখা পোস্ট করার চেষ্টা করবো ।


আরও পড়ুনঃ ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের ইতিহাস | দেশ ভাগের ইতিহাস (সংক্ষিপ্ত)

Previous Post Next Post