জাফরান এর উপকারিতা কি কি | জাফরান খাওয়ার উপকারিতা

জাফরান এর উপকারিতা কি কি | জাফরান খাওয়ার উপকারিতা - জাফরান একটি অত্যান্ত দামী একটি উদ্ভিদ যা মসলা হিসাবে ব্যবহার হয় । আজকের এই ব্লগ পোস্ট থেকে আমরা বিশেষ করে জানতে চেষ্টা করবো জাফরান সম্পর্কে । অতীত কাল থেকে বিভিন্ন কাজে জাফরান ব্যবহৃত হয়ে আসছে । আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা জাফরান এর উপকারিতা কি কি | জাফরান খাওয়ার উপকারিতা সম্মন্ধে জানতে চান ।

আরও পড়ুনঃ খেজুরের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা | খেজুরের গুড় নিয়ে বিস্তারিত

জাফরান এর উপকারিতা কি কি | জাফরান খাওয়ার উপকারিতা

আরও পড়ুনঃ রুই মাছের উপকারিতা | রুই মাছ

তো বন্ধুরা, আজকের ব্লগ পোস্টে থেকে জাফরান সম্পর্কে যেমন - জাফরান কি?, জাফরান শব্দের অর্থ কি?, জাফরানের উৎপত্তিস্থল কোথায়?, জাফরান কিভাবে তৈরী হয়?, জাফরান ফুল দেখতে কেমন?, জাফরানের ব্যবহার, জাফরান খাওয়ার উপকারিতা, জাফরান খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে জানবো । তাহলে চলুন বন্ধুরা মূল আলোচনায় যাই ।

জাফরান কি?

জাফরান নামের এই অতি মুল্যবান মসলাটি সাধারণত “Saffron Crocus” নামে পরিচিত । এর ইংরেজি নাম স্যাফরন (Saffron) । জাফরান এর বৈজ্ঞানিক নাম ক্রোকাস স্যাটিভাস (Crocus Sativus) । অত্যন্ত মূল্যবান হওয়ায় জাফরানকে বাণিজ্যিক অঙ্গনে লাল সোনা (Red Gold) বলা হয়ে থাকে ।

জাফরান এর উপকারিতা কি কি
জাফরান এর শিষ 

জাফরান শব্দের অর্থ কি?

জাফরনের ইংরেজি শব্দ "Saffron" উৎপত্তি ঘিরে সঠিক তথ্যের অভাব রয়েছে । তবে ধারণা করা হয় যে, ১২ শতকের প্রাচীন ফার্সি শব্দ জার্পারান থেকে এটির উৎপত্তিও হতে পারে । আবার ধারনা করা হয় লাতিন শব্দ “Safranum” থেকেও এর নামের উৎপত্তি হয়েছে যা আবার আরবি শব্দ জাফরান থেকে এসেছে । ফার্সি শব্দ জার্পারান যার অর্থ "সুবর্ণ পাপড়ি দিয়ে ফুল" ।

জাফরানের উৎপত্তিস্থল কোথায়?

জাফরান ইরান, ভারত ও গ্রিস এর বেশ কিছু জায়গায় চাষ হয় । এছাড়াও আফগানিস্তান, পাকিস্তান, তুরস্ক, মিশর, ইরান ও চীনে জাফরান চাষ হয় । এমনকি আমেরিকার কিছু এলাকাতেও জাফরানের চাষ হয় । অনেকের মতে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে জাফরানের চাষ হয়ে থাকে । তবে সারা বিশ্বে ইরানি জাফরানের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে । বর্তমানে বিশ্বের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদনের প্রায় ৯০ শতাংশ জাফরান ইরানে উৎপাদিত হচ্ছে ।

জাফরান কিভাবে তৈরী হয়?

জাফরান হল ক্রোকাস স্যাটিভাস (Crocus Sativus) ফুলের শুকনো শিস বা গর্ভমুণ্ড । এটি একটি সুতোর মতো কাঠামোর হয় যা ফুলের কেন্দ্রস্থলে পরাগ ধরে থাকে । জাফরান গাছটি চারটি ফুল বহন করে, যা থেকে স্টাইলিশ এবং ক্রিমসন রঙের শিস সংগ্রহ করে পরে শুকানো হয় । একটি ফুল থেকে জাফরানের তিনটি সুতো পাওয়া যায় এবং এক পাউন্ড জাফরান তৈরি করতে প্রায় ১৪০০ জাফরান সুতো বা শিস বা গর্ভমুণ্ড দরকার হয় ।

জাফরান এর উপকারিতা কি কি
জাফরান ফুলের শুকনো শিস বা গর্ভমুণ্ড

জাফরান ফুল দেখতে কেমন?

জাফরান ফুল দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি আকর্ষণীয় সুগন্ধ যুক্ত । এই উদ্ভিদের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর কোনো বীজ হয় না । বিস্ময়ের ব্যাপার যে, জাফরান গাছের ফুল হয় কিন্তু বীজ হয় না । আর বীজ না হওয়ার কারণ হচ্ছে এই উদ্ভিদের দেহে কোন মিয়োসিস কোষ বিভাজন না হওয়া । আর জাফরানের এই ব্যতিক্রমী জন্ম প্রক্রিয়ার জন্যও এটি এত মূল্যবান একটি মসলা ।

জাফরানের ব্যবহার

জাফরান (Saffron)/ জাফরান ফুলের গাঢ় লাল রঙের এবং শৈলীর গর্ভমুণ্ড, যাকে জাফরানের আঁশ বলা হয় । এগুলোকে ইংরেজিতে বলা হয়ে থাকে “Stigma” । জাফরানের আঁশ সংগ্রহ করে এবং শুকানোর মাধ্যমে জাফরান মশলা তৈরি করা হয় যা প্রধানত খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি এবং এর বিশেষ আকর্ষনীয় রঙ এর জন্য ব্যবহার করা হয় ।

আমাদের দেশে জাফরান মূলত ব্যবহার হয় জরদা নামের এক প্রকার মিষ্টান্ন ও পায়েস তৈরিতে । বিরিয়ানিতে সুন্দর রং আনার জন্যও জাফরান ব্যবহার করা হয়ে থাকে । এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার খাবার তৈরীর কাজে জাফরান ব্যবহৃত হয় । বিশেষ করে মিষ্টান্ন দ্রব্য তৈরীতে এটি ব্যাবহার হয় ।

জাফরান খাওয়ার উপকারিতা

👉 জাফরানে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল, ম্যাংগানিজ, যা রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে । এর মধ্যে উপস্থিত রয়েছে ভিটামিন সি, যা শরীরকে ইনফেকশন বা সংক্রমণের হাত থেকেও রক্ষা করে ।

👉 জাফরানের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান বাতের ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা, মাংসপেশির ব্যথা দূর করতে বেশ সাহায্য করে । শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে এটি দারুণ উপযোগী ।

👉 শারীরিক দিক থেকে দুর্বল মেয়েদের জন্য জাফরান খুবই উপকারী । প্রত্যেক দিন সামন্য জাফরান দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে শারীরিক বেশ কিছু হরমোন উদ্দীপিত হয় । যার কারনে শরীর হয় সুস্থ্য ও সবল ।

👉 অনেকেই ঘুমের সমস্যায় ভোগেন । সে ক্ষেত্রে জাফরান ব্যবহার করতে পারেন । রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধে সামান্য জাফরান মিশিয়ে খান, দেখবেন ঘুম ভালো হবে ।

👉 জাফরান-এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ক্যানসার, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-হাইপারলিপিডেমিক উপাদানগুলি অ্যাসিডিটির সমস্যাও দূর করে ।

👉 জাফরান ক্যানসারের মতো রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে । এর মধ্যে রয়েছে এক ধরনের ক্যারোটিন থাকে যাকে ক্রোসিন বলা হয় । এই উপাদান আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার কোষ, যেমন - কোলন অ্যাডনোকারসিনোমা, ওভারিয়ান কারসিনোমা, লিউকোমিয়া ইত্যাদি (ক্যান্সার কোষ) ধ্বংস করতে সাহায্য করে ।

👉 সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, জাফরান স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে । জাপানে পারকিনসন এবং স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার বিভিন্ন অসুখে জাফরান ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।

জাফরান এর উপকারিতা কি কি
জাফরান এর কান্ড

জাফরান খাওয়ার নিয়ম

জাফরান সাধারনত দুধ দিয়ে খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায় । নিম্নে জাফরান ও দুধ তৈরীর নিয়ম দেওয়া হলো ।

জাফরান দুধ যেভাবে বানাবেন

প্রয়োজনীয় উপাদানঃ

সামান্য জাফরান, ১ গ্লাস গরুর খাঁটি দুধ এবং ১ চামচ অর্গানিক মধু ।

জাফরান মিশ্রিত দুধ যেভাবে বানাতে হবে ---

১। প্রথমে একটি পাত্রে গরুর দুধ নিয়ে ভালো করে নেড়েচেড়ে গরম করে নিতে হবে ।

২। এটি গরম করার পর এর মধ্যে সামান্য জাফরান দিয়ে আরও দুই থেকে তিন মিনিট গরম করে চুলা থেকে নামিয়ে রাখুন ।

৩। দুধ যখন হালকা গরম থাকবে তখন একটি গ্লাসের মধ্যে ঢেলে নিন ।

৪। এবার এর সাথে খাটি মধু মিশিয়ে পান করুন ।

এই দুধ হালকা গরম থাকতেই খেয়ে খেয়ে নিতে হবে । একদম ঠাণ্ডা হয়ে গেলে জাফরান দুধ খাওয়া একেবারেই ঠিক নয় । এটি হালকা গরম থাকতেই খাওয়া বেশ উপকারী ।

জাফরান খাওয়ার উপযুক্ত সময়

জাফরান দুধ পান করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হল রাত্রে ঘুমানোর আগে । তাহলে এর উপকারিতা এবং কার্যকারিত গুলো খুব ভালোভাবে পাবেন ।

জাফরান এর পুষ্টিগুন

জাফরান ক্রোকাস স্যাটিভাস (Crocus Sativus) উদ্ভিদের থেকে প্রাপ্ত একটি মশলা । এটি সাধারণত খাবারে স্বাদ এবং রঙ যোগ করার জন্য রান্নায় ব্যবহৃত হয় এবং এটি বহু শতাব্দী ধরে ঔষধি উদ্দেশ্যেও ব্যবহৃত হয়ে আসছে ।

যদিও জাফরান প্রোটিন, চর্বি বা কার্বোহাইড্রেটের মতো ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টগুলির একটি উল্লেখযোগ্য উৎস নয়, তারপরও এটিতে বিভিন্ন ধরণের মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট এবং বায়োঅ্যাকটিভ উপাদান রয়েছে যা স্বাস্থের জন্য উপকারি ।

এখানে জাফরান থেকে পাওয়া যায় এমন পুষ্টিগুন দেওয়া হলো ---

ক্যারোটিনয়েড: জাফরান ক্যারোটিনয়েড এর একটি ভালো উৎস, যা কেশর যা মশলাটিকে এর স্বতন্ত্র সোনালি-হলুদ রঙ দিয়েছে । জাফরান থেকে পাওয়া প্রাথমিক ক্যারোটিনয়েডগুলি হল ক্রোসেটিন এবং ক্রোসিন, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য আছে ।

ভিটামিন বি-2: জাফরান ভিটামিন বি-2 এর একটি ভাল উৎস, যা রিবোফ্লাভিন নামেও পরিচিত । এই ভিটামিন শক্তি উৎপাদন ও চর্বি এবং কার্বোহাইড্রেট বিপাকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।

ম্যাঙ্গানিজ: জাফরানে অল্প পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে যা স্বাস্থ্যকর হাড়, ক্ষত নিরাময় এবং কার্বোহাইড্রেট, অ্যামিনো অ্যাসিড এবং কোলেস্টেরল এর বিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান ।

আয়রন: জাফরানে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন এবং সারা শরীরে অক্সিজেন পরিবহনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পালন করে ।

পটাসিয়াম: জাফরানে কিছু পটাসিয়াম রয়েছে, যা স্বাস্থ্যকর রক্তচাপ এবং শরীরে তরল ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ।

জাফরান এর উপকারিতা কি কি
জাফরান ফুল

জাফরান এর দাম

জাফরান বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মশলাগুলির মধ্যে একটি । জাফরান প্রধানত ক্রোকাস ফুল থেকে সূক্ষ্ম কেশর সংগ্রহের শ্রম-নিবিড় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে । জাফরানের গুণমান, উৎপত্তি দেশ এবং কেনা পরিমাণের উপর নির্ভর করে জাফরানের দাম পরিবর্তিত হতে পারে ।

তবে জাফরান পাইকারি হিসাবে প্রতি পাউন্ড বা ৪৫০ গ্রাম জাফরান ৫ হাজার ডলারে বিক্রি হয় । এক পাউন্ডে ৭০ হাজার থেকে ২ লাখ কেশর থাকতে পারে । যে কারণে জাফরানের দাম অনেক বেশি ।

জাফরান এর দাম বাংলাদেশে

বিশ্বের সবচেয়ে দামি মসলা হচ্ছে জাফরান । এক কেজি জাফরানের গড় দাম বাংলাদেশি টাকার প্রায় চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার সমান । জাফরান গাছের ফুল থেকেই জাফরান আঁশ সংগ্রহ করা হয় । আর এক পাউন্ড বা ৪৫০ গ্রাম জাফরান তৈরির জন্য প্রায় ৭৫ হাজার ফুল প্রয়োজন পড়ে । যে-কোনো মসলা সংগ্রহের পদ্ধতি থেকে জাফরানের সংগ্রহ পদ্ধতি অনেকটাই ভিন্ন ।

আর সে কারনে অল্প সময়ের মধ্যে দক্ষ কর্মির মাধ্যমে এই মুল্যবান মসলা সংগ্রহ করতে হয় । মূলত জাফরানের চাষ এবং সংগ্রহ পদ্ধতি ভিন্ন হওয়ার কারণেই জাফরানের দাম অনেক বেশি ।

জাফরান চেনার উপায়

জাফরানের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর আকর্ষনীয় ঘ্রান । এর ঘ্রান মিষ্টি, কিন্তু স্বাদে তিতকুটে ধরনের । তাই অল্প পরিমাণ জাফরান জিহবায় নিয়ে পরীক্ষা করা যায় এর স্বাদ, যদি মিষ্টি হয়, তাহলে এটি আসল জাফরান নয় সেটা বুঝতে পারবেন ।

নির্ভেজাল জাফরান কিনা তা পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হতে, কয়েকটা জাফরানের কুশি পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে যদি পানি লাল হয়ে যায়, তাহলে নিঃসন্দেহে এটি রঙ মেশানো নকল জাফরান । আর যদি পানির রঙ হাল্কা হলদেটে রঙ হয়, তাহলেই বুঝবেন এটি আসল জাফরান ।

গর্ভবতী মায়ের জন্য জাফরানের উপকারিতা

গর্ভধারণের পর পঞ্চম মাস শুরু হলে তবেই শুধুমাত্র জাফরান গ্রহণ করুন । কারণ এই সময়ে গর্ভাবস্থা স্থিতিশীল থাকে এবং অকাল প্রসবের কারণে শিশুর বিপদে পড়ার ঝুঁকি হ্রাস পায় । একটি কমন সমস্যা হলো গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা দেখা দেওয়া । নিয়মিত খাবার তালিকায় জাফরান রাখলে এটি আপনার শরীরের আয়রন ও হিমোগ্লোবিনের স্তর বজায় রাখতে সাহায্য করবে ।

গর্ভাবস্থার সমস্যা যতটা সম্ভব কম করতে এই সময় স্বাস্থ্যকর খাওয়া দাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি । এই কারণে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য কেশর বা জাফরান অত্যন্ত জরুরি বলে আয়ুর্বেদে উল্লেখ রয়েছে ।

জাফরান তেল

জাফরান তেল মাথার চুলের যত্নে ব্যবহার হয় । যা জাফরান হেয়ার অয়েল/ জাফরান হারবাল হেয়ার অয়েল নামে পরিচিত । এটি চুলের যত্নে নিয়ম মেনে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায় । এবার আসুন জেনে নেই জাফরান হেয়ার অয়েল ব্যবহারের নিয়ম ।

জাফরান তেল ব্যবহার করার নিয়ম

এই তেল রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করতে পারবেন । তবে পরের দিন শ্যাম্পু যে করে নিবেন । যাদের চুল পড়ার সমস্যা বেশি তারা জাফরান তেল সকালে ও রাতে ব্যবহার করতে পারেন । এত বিশেষ উপকার পাবেন ।

জাফরান এর উপকারিতা কি কি
জাফরান সংগ্রহ চাষ এবং সংগ্রহ

জাফরান তেল এর উপকারিতা

জাফরান তেল জাফরান উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত একটি প্রাকৃতিক তেল, এবং এর বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে ।

এখানে জাফরান তেলের কিছু উপকারিতা দেওয়া হলো ---

স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কমায়: জাফরান তেল ব্যবহারের ফলে স্নায়ুতন্ত্রের উপর একটি শান্ত প্রভাব ফেলে এবং এটি স্ট্রেস এবং উদ্বেগের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ।

ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে: জাফরান তেলের প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এটি ত্বকের জ্বালা প্রশমিত করতে, লালভাব এবং দাগ কমাতে এবং বর্ণ উজ্জ্বল করতে ব্যবহার করতে সাহায্য করে ।

মন ভালো রাখে: জাফরান তেলের মেজাজ স্বাভাবিক রাখে এবং এটি বিষণ্নতার লক্ষণগুলি উপশম করতে এবং সামগ্রিক মেজাজ উন্নত করতে সহায়তা করে ।

মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়: জাফরান তেল মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে পারে এবং এটি অ্যালঝাইমারের মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের বিরুদ্ধেও সুরক্ষা মূলক কাজ করে ।

প্রদাহ কমায়: জাফরান তেলের প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এটি শরীরের ব্যথা এবং প্রদাহ উপশম করতে ব্যবহার করা হয় ।

চুলের স্বাস্থ্যের উন্নত করে: জাফরান তেল চুলের ফলিকলকে শক্তিশালী করে, মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে ।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: জাফরানের তেলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীরকে সংক্রমণ ও রোগ থেকে রক্ষা করে ।

এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে জাফরান তেল পরিমিতভাবে ব্যবহার করা উচিত, কারণ এটি একটি শক্তিশালী তেল যা অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করলে শরীরে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে । সে কারনে জাফরান তেল ব্যবহার করার আগে একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করা উচিৎ ।

ইসলাম ধর্মে জাফরান

ইসলাম ধর্মে জাফরান খাওয়া বৈধ । রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর যুগে জাফরানের বেশি ব্যবহার ছিল পোশাকের ক্ষেত্রে । ইসলামে পুরুষের জন্য জাফরান রঙের পোশাক নিষিদ্ধ করেছে । তবে নারীদের জন্য তা নিষিদ্ধ নয় । আনাস (রাঃ) বলেন, “নবী করিম (সাঃ) পুরুষদের জাফরানি রঙের কাপড় পরতে নিষেধ করেছেন” । (বুখারি, হাদিস: ৫৮৪৬)


এই রকম আরো পোস্ট পেতে চাইলে “জিনিয়াস বাংলা ব্লগ” এর কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে আমাদের জানিয়ে দিন । আমরা আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী লেখা পোস্ট করার চেষ্টা করবো ।


আরও পড়ুনঃ মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা কি | মাশরুমের স্বাস্থ্য উপকারিতা

Previous Post Next Post