সুস্থ থাকার খাবার তালিকা | শরীর সুস্থ রাখার খাবার
- সুস্থ থাকার জন্য প্রথমেই খাওয়া-দাওয়ার দিকে নজর দিতে হবে । পরিমিত খাদ্য গ্রহণ
এবং নিয়মিত ঘুম ও নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারলে দেখবেন শরীর ও স্বাস্থ্য অনেক ভালো থাকবে
। যাই করুন না কেন খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে সব থেকে বেশি ।
আরও পড়ুনঃ এলার্জি দূর করার উপায় কি | এলার্জি দূর করার উপায়
আরও পড়ুনঃ শরীরের ওজন বৃদ্ধি করার সহজ উপায় | ওজন বাড়ানোর উপায়
আজকের ব্লগ পোস্টে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো সুস্থ থাকার খাবার তালিকা | শরীর সুস্থ রাখার খাবার । আপনাদের মধ্যে যারা স্বাস্থ্য সচেতন এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে চান তারা আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়বেন । এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে ।
শরীর সুস্থ রাখতে খাবার
খাবার বেশি বেশি খেলেই চলবে না, শরীর ঠিক রাখতে হলে যতটুকু খাওয়া দরকার ঠিক ততটুকুই খাবেন । অতিরিক্ত বাসি খাবার, টক যুক্ত এবং লবণাক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো । আবার প্রতিদিন বেশি প্রোটিন ভিটামিন খাবারও দরকার নেই । যা খেলে মুটামুটি শরীর সুস্থ রাখা যাবে তাই খাওয়া উচিত ।
আপনার খাদ্য তালিকায় যোগ করুন সবুজ শাকসবজি, লেবু,
কাঁচামরিচ । মৌসুমী ফল কমলা, পেয়ারা, আমলকি এবং আমাদের দেশের যত কম দামে কিনতে পাওয়া
যায় এমন ফল খাবেন । ভিটামিন সি জাতীয় ফল বেশি খেলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে
বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে ।
আমাদের দেশে প্রচুর মৌসুমী ফল পাওয়া যায়, যেমন – আম,
জাম, আনারস, কাঁঠাল, লিচু, পাকা কলা সহ আরো অনেক রকমের ফল পাওয়া যায় । এসমস্ত ফলের
মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন । তাই মৌসুমের এসব ফল নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখুন
।
আঁশযুক্ত শাকসবজি শুধু কোষ্ঠকাঠিন্যই দূর করবে না, মলাশয়ের
ক্যান্সার ঠেকাতে ও এরা রাখবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা । জীবনধারণের জন্য খাদ্য গ্রহণ অপরিহার্য
। তেমনি সুস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য খাদ্য গ্রহণের নিয়ম কানুন মেনে চলা ও ঘুম ঠিক
রাখা আমাদের সকলেরই উচিত ।
বিভিন্ন বয়সের মানুষের খাদ্য তালিকা
১৫-১৮ বছর বয়স্কদের জন্য | প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য | ||
---|---|---|---|
খাদ্যের নাম | পরিমান | খাদ্যের নাম | পরিমান |
চাল/আটা | ৩০০ গ্রাম | মিহি চাল | ৩০০ গ্রাম |
ডাল | ৫০ গ্রাম | পাউরুটি বিস্কুট | ১০০ গ্রাম |
মাছ/মাংস/ডিম | ৫০ গ্রাম | মাংস | ৫০ গ্রাম |
আলু/মিষ্টি আলু | ১৭৫ গ্রাম | বড় মাছ | ৫০ গ্রাম |
শাক | ৭০ গ্রাম | ডিম | ১ টা |
অন্যান্য সবজি | ৭০ গ্রাম | ফল | ১ টা |
চিনি/গুড় | ৪০ গ্রাম | দুধ | ২৫০ গ্রাম |
ফল | ১টা | মাখন | ২০ গ্রাম |
তেল | ২০ মিঃ লিঃ | চিনি | ২০ গ্রাম |
শাক | ৫০ গ্রাম | ||
অন্যান্য সবজি | ১০০ গ্রাম | ||
তেল/ঘি | ৫০ গ্রাম |
আপনি নিয়ন্ত্রিত খাদ্য তালিকা অনুযায়ী চলতে না পারলে
জানবেন ওটা আপনার উপযোগী ছিল না । তাই যে কোনও নিয়ন্ত্রিত খাদ্য তালিকা অনুযায়ী চলার
আগে কয়েকটি বিষয় যাচাই-বাছাই করে দেখে নিন তালিকাটি আপনার উপযোগী কিনা ।
শরীর সুস্থ রাখতে যে খাবার খাওয়া উচিত
** যতটা সম্ভব খাবারে অল্প তেল ব্যবহার করুন এতে স্নেহ
জাতীয় পদার্থ কম খাওয়া হবে ।
** চর্বি থাকলে মাংস রান্নার আগে চর্বি গুলো বাদ দিয়ে
দিন ।
** যতটা সম্ভব মাংস কম খাবেন । দিন-রাতে একবারের বেশি
কখনো নয় । খাসির মাংস রান্না হলে খুব ছোট ছোট টুকরো করুন । চর্বি কম দেখে কিনবেন এবং
তেল কম দিয়ে রান্না করবেন ।
** ননীযুক্ত দুধ খাবেন না ।
** যতটা সম্ভব খাদ্যতালিকায় কাঁচা ও সবুজ শাক-সবজি
রাখুন । নানা রকম ডাল ও মটরশুঁটি ইচ্ছামত খান । সেদ্ধ করে খাবার চেষ্টা করুন ।
** খাসির মাংসের বদলে ডিম, মুরগির মাংস কিংবা মাছ খাওয়া
উচিত ।
** ভাত রুটি কম খেতে চেষ্টা করুন । বেশি বেশি ফল খান
ও সবজি খান । ভাত রুটির চেয়ে পাউরুটি টোস্ট করে খাওয়াটা অনেক ভালো, অবশ্যই মাখন ছাড়া
।
** দিনে একবার মাছ-মাংস খেয়ে বাকি সময় নিরামিষ খাবার
খেতে চেষ্টা করুন ।
** অনেকটা একবারে না খেয়ে বারে বারে কম করে খান । কিন্তু
বারে বারে কম খাবার মানে মিষ্টি বা ভাজাভুজি এবং ফিস ফ্রাই ধরনের খাবার নয় । শসা,
ফল কিংবা সালাদ ইত্যাদি এই ধরনের খাবার খেতে হবে ।
** নিয়মিত ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন । এতে আপনার শরীর
সুস্থ এবং ফিট থাকবে ।
শরীর সুস্থ রাখতে যে খাবার খাওয়া অনুচিত
** অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার, পেস্ট্রি, কেক, পুডিং,
মিষ্টি, পায়েস, যে কোনো ভাজাভুজি ইত্যাদি খাওয়া কমিয়ে দেওয়াই ভালো ।
** আইসক্রিম, চিজ, মাখন, মাঠাযুক্ত দুধ যতটা কম পারা
যায় খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে এবং ডিম সপ্তাহে দুটির বেশি না খাওয়াই উচিত ।
** সবজি ও ফলমূল বেশি ধোবেন না । কাটার পর না ধোয়াই
উচিত । শাক সবজি বেশি সিদ্ধ করে ফেললে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায় ।
** রাতে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করবেন না যা অস্বাস্থ্যকর
। অল্প খাবার খাবেন, শুকনো টোস্ট কিংবা একটা ডিম ও সেই সঙ্গে একটা ফল যথেষ্ট ।
** খাবার টেবিলে রকমারি খাবার এর উপস্থিতি কম রাখবেন
।
** সকালের নাস্তা হিসাবে কাজুবাদাম, বিভিন্ন ধরনের মুচমুচে
খাবার কিংবা ক্রিম দেওয়া বিস্কুট একেবারেই নয় ।
** অতিরিক্ত খাওয়া বাদ দিতে হবে এবং প্রধান খাবারের
ফাঁকে ফাঁকে কিছু খাওয়া যাবে না ।
** তাড়াতাড়ি খেলে খাবার তৃপ্তি পাওয়া যায় না বলে
ভালভাবে চিবিয়ে ধীরে ধীরে খাবেন । এতে কম খেলেও তৃপ্তি আসবে ।
** অলস জীবন অভ্যাস ত্যাগ করে স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যস্ত থাকুন । অলস জীবন যাপনে খাবারের চাহিদা বেড়ে যায় ।
এই রকম আরো পোস্ট পেতে চাইলে “জিনিয়াস বাংলা ব্লগ” এর কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে আমাদের জানিয়ে দিন । আমরা আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী লেখা পোস্ট করার চেষ্টা করবো ।
আরও পড়ুনঃ টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা