হযরত আলী রাঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী | Short Biography of Hazrat Ali

হযরত আলী রাঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী | Short Biography of Hazrat Aliআলী ইবনে আবী তালিব (আরবিতে আলী রাঃ - علي ابن أبي طالب‎) হযরত আলী (রাঃ) নামেই তিনি প্রসিদ্ধ । হযরত আলী (রাঃ) আনুমানিক ১৩ সেপ্টেম্বর ৬০১ খ্রিস্টাব্দে মক্কায় ঐতিহ্যবাহী কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন । 

তিনি ছিলেন ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ)-এর একই সাথে চাচাতো ভাই, জামাতা এবং সাহাবি । হযরত আলী (রাঃ) ইসলামের চতুর্থ খলিফা হিসেবে ৬৫৬ থেকে ৬৬১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মুসলিম জাহান শাসন করেন ।

অন্য পোস্টঃ টেলিটক সিমের ইমারজেন্সি ব্যালেন্স কোড | Teletalk Emergency Balance Code

হযরত আলী রাঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী

অন্য পোস্টঃ দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম | বিদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম

শিশু বয়স থেকেই তিনি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর সঙ্গে লালিত-পালিত হন । ইসলামের ইতিহাসে তিনি পুরুষদের মধ্যে সর্বপ্রথম যিনি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর সঙ্গে নামাজ আদায় করতেন । আজকের ব্লগ পোস্টে আলোচনা করবো ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রাঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী ।

বালকদের মধ্যে সর্বপ্রথম বালক যিনি নবুওয়াতের ডাকে সাড়া দিয়ে মাত্র ১০ বছর বয়সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন । হযরত আলী (রাঃ) ছিলেন একজন অকুতোভয় যোদ্ধা । বদর যুদ্ধে বিশেষ বীরত্বের জন্য হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আলী (রাঃ) কে জুলফিকার নামক তরবারি উপহার দিয়েছিলেন ।

খাইবারের সুরক্ষিত কামুস দুর্গ জয় করলে মহানবী রাসুলুল্লাহ (সাঃ) হযরত আলী (রাঃ) কে আসাদুল্লাহ বা আল্লাহর সিংহ উপাধি দেন । হযরত আলী (রাঃ) একজন দুঃসাহসী এবং দক্ষ কৌশলী যোদ্ধা ছিলেন । তিনি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর সঙ্গে প্রায় সব যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ।

হযরত আলী (রাঃ) ছিলেন মহানবী রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর কন্যা হযরত ফাতিমা (রাঃ) এর স্বামী । রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন তখন হযরত আলী (রাঃ) কে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বিছানায় রেখে যান । তিনি অত্যান্ত সাহসের সঙ্গে সে দায়িত্ব পালন করেন ।

খিলাফতের নির্বাচনের পরপরই তিনি ইসলামী রাষ্ট্রের রাজধানী মদিনা থেকে ইরাকের কুফায় সরিয়ে নেন । যা ছিল অধিকতর কেন্দ্রীয় একটি স্থান । তার নির্বাচনের পরপরই জনগণের বিশেষ করে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-প্রভাবশালী সাহাবী, যেমন- তালহা (রাঃ) এবং হযরত জুবায়ের (রাঃ) এর উত্থাপিত “হযরত উসমান (রাঃ)-এর হত্যাকারীদের যথা শিগগির শাস্তির দাবির সম্মুখীন হন” ।

অন্য পোস্টঃ 

হযরত আলী (রাঃ) ঘোষণা করেন যে, তার সর্বোচ্চ অধিকার রাষ্ট্রের শান্তি-শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপন করা এবং কেবল তারপরই তিনি হযরত উসমান (রাঃ) এর হত্যাকারীদের বিচারের সম্মুখীন করতে পারবেন । কিন্তু হযরত তালহা (রাঃ) এবং হযরত জুবায়ের হযরত আলী (রাঃ)-এর এই সিদ্ধান্তে রাজি হননি ।

তারা সৈন্যবাহিনী প্রস্তুত করা শুরু করেন । হযরত আয়েশা (রাঃ) যিনি প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অবগত ছিলেন না । তিনিও হযরত ওসমান (রাঃ) এর হত্যাকারীদের শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে হযরত তালহা (রাঃ) এবং হযরত জুবায়ের (রাঃ) এর সঙ্গে যোগ দেন । তিনজনে মিলে বসরার উদ্দেশ্যে একদল সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দেন ।

হযরত আলী (রাঃ) যুদ্ধ এবং রক্তপাত এড়াতে অনেক চেষ্টা করেন । কিন্তু তার সব প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় । দুর্ভাগ্যজনক ভাবে, তার এবং হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর সৈন্যবাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ হয় । যদিও হযরত তালহা (রাঃ) এবং হযরত জুবায়ের (রাঃ) যুদ্ধের আগেই সেনাবাহিনী ত্যাগ করেন । অথবা অন্য কোন শত্রু দ্বারা নিহত হন ।

হযরত আয়েশা (রাঃ) সৈন্যরা পরাজিত হয় কিন্তু হযরত আলী (রাঃ) তাকে যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন । তিনি তার নিরাপত্তার খেয়াল রাখেন । হযরত আলী (রাঃ) হযরত আয়েশা (রাঃ) এর ভাই মোহাম্মদ বিন আবু বকর (রাঃ) এর রক্ষাবেষ্টনীতে তাকে মদিনায় প্রেরণ করেন ।

এই যুদ্ধ “উটের যুদ্ধ” নামে খ্যাত । কারণ হযরত আয়েশা (রাঃ) যুদ্ধের সময় ঊটের উপর সওয়ারি ছিলেন । পরবর্তী সময়ে হযরত আয়েশা (রাঃ) জীবনভর হযরত আলী (রাঃ)-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য অনুতপ্ত ছিলেন ।

উটের যুদ্ধের পর হযরত আলী (রাঃ) হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) কে যিনি তখনো তার হাতে বায়াত গ্রহণ করেননি, ইসলামের বৃহত্তর স্বার্থে তার নিকট আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানান । কিন্তু হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) এই অজুহাতে তার কাছ থেকে নিজেকে সমর্পণ করেননি যে, হযরত উসমান (রাঃ) যিনি ওমাইয়া বংশোদ্ভূত ছিলেন । তার রক্তের প্রতিশোধ প্রথমে নিতে হবে ।

এই বিপর্যস্ত পরাজয়ের পর খারেজিরা হযরত আলী (রাঃ), হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) এবং হযরত আমর বিন আস (রাঃ) কে হত্যার পরিকল্পনা করে । পরবর্তী দুজন হত্যা প্রচেষ্টা হতে বেঁচে যেতে সক্ষম হন । কিন্তু হযরত আলী (রাঃ) ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়ার সময় আক্রমণকারীদের দ্বারা গুরুতর আহত হন ।

এর দুই দিন পর অমিত সাহসী এবং ধর্মপ্রাণ খলিফা হযরত আলী (রাঃ) (আনুমানিক ২৯ জানুয়ারি ৬৬১ খৃষ্টাব্দ) ৪০ হিজরীর ২০ রমজানে পরলোকগমন করেন । তিনিও সেই দশজন সৌভাগ্যশালীদের একজন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যাদের বেহেশতের সুসংবাদ প্রদান করেছিলেন ।


এই রকম আরো পোস্ট পেতে চাইলে “জিনিয়াস বাংলা ব্লগ” এর কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে আমাদের জানিয়ে দিন । আমরা আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী লেখা পোস্ট করার চেষ্টা করবো ।


অন্য পোস্টঃ প্রাকৃতিক উপায়ে উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায়

Previous Post Next Post