বাংলাদেশের
জাতীয় বিষয় সমূহ | National affairs of Bangladesh - বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য,
সাংস্কৃতিক জীবনধারা ও আদর্শের প্রতিনিধিত্ব করে থাকে জাতীয় বিষয় সমূহ ।
বাংলাদেশের অনেক রাষ্ট্রিয় প্রতিক রয়েছে যেগুলো এদেশের জাতীয় বিষয় বলে উল্লেখ করা
হয় । বাংলাদেশের জাতীয় বিষয় সমূহ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বিভিন্ন সময় নির্ধারণ
করা হয় ।
আজকের
ব্লগ পোস্টে আপনাদের জানানোর উদ্দেশ্যে এবং আপনাদের সুবিধার্তে বাংলাদেশের জাতীয় বিষয় সমূহ এখানে উল্লেখ করা
হলো । চলুন তবে দেখে নিই এবং জেনে নিই এদেশের জাতীয় বিষয় সমূহ ।
অন্য পোস্টঃ বাংলাদেশের ১০ টি সেরা বীমা কোম্পানি | 10 Best Insurance Companies in Bangladesh
অন্য পোস্টঃ মহান আল্লাহর ৯৯টি নাম ও তার অর্থ
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা
বাংলাদেশের
জাতীয় পতাকা সবুজ আয়তক্ষেত্রের মধ্যে লাল বৃত্ত । ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের জাতীয়
পতাকা বিধি প্রণীত হয় । বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং লাল
বৃত্তের ব্যাসার্ধের অনুপাত ৫ঃ৩ঃ১ ।
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা |
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার বর্তমান রূপটি ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি সরকারীভাবে গৃহীত হয় । বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ডিজাইনার পটুয়া কামরুল হাসান ।
১৯৭১
সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের পতাকার উপর ভিত্তি করে এই পতাকা নির্ধারণ করা হয় । তখন
লাল বৃত্তে বাংলাদেশের মানচিত্র অঙ্কিত পতাকা ছিল । মানচিত্র খচিত বাংলাদেশের
জাতীয় পতাকার ডিজাইনার ছিলেন শিব নারায়ণ দাস ।
১৯৭১
সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের বটতলায় এক ছাত্র সভায় তৎকালীন
ছাত্রনেতা ডাকসু ভিপি আ.স.ম আব্দুর রব বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা প্রথম উত্তোলন করেন
। এজন্য ২ মার্চ জাতীয় পতাকা দিবস হিসেবে পালন করা হয় ।
ভারতের
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতাস্থ বাংলাদেশ মিশনে ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল এম
হোসেন আলী বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন । এটি কোন বিদেশী মিশনে সর্ব প্রথম
বাংলাদেশী পতাকা উত্তোলন । বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সাথে জাপানের জাতীয় পতাকার
মিল রয়েছে ।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন
বাংলাদেশের
জাতীয় সংসদ ভবন ঢাকার শেরেবাংলানগরে অবস্থিত । প্রখ্যাত মার্কিন স্থপতি লুই কান
এটির মূল স্থপতি । পূর্ববাংলার আইনসভা হিসাবে বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
জগন্নাথ হলটি ব্যবহৃত হতো ।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন |
বাংলাদেশের
প্রথম ও দ্বিতীয় সংসদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় পুরনো সংসদ ভবনে যা বর্তমানে
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে । ১৯৬১ সালের বর্তমান জাতীয় সংসদ
ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় । নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর ১৯৮২ সালের ২৮
জানুয়ারি এর উদ্বোধন করা হয় । তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তার সংসদ ভবনের
উদ্বোধন করেন ।
একই
বছর ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদের অষ্টম অধিবেশনে বর্তমান ভবনটি প্রথম
সংসদ ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয় । ১৯৮৯ সালে সংসদ ভবন স্থাপত্য উৎকর্ষতার জন্য “আগা
খান” পুরস্কার লাভ করে ।
সংসদ
ভবন এলাকার আয়তন ২১৫ একর । ভবনটি ৯ তলা বিশিষ্ট । জাতীয় সংসদ ভবনের মূল ভবনের
সর্বোচ্চ উচ্চতা ১১৭ ফুট । জাতীয় সংসদ ভবন সংলগ্ন লেকটি “ক্রিসেন্ট লেক” নামে
পরিচিত ।
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক |
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক
বর্ণনা:
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক উভয় পাশে ধানের শীষ বেষ্টিত পানিতে ভাসমান শাপলা ফুল ।
তার মাথায় পাটগাছের পরস্পর সংযুক্ত তিনটি পাতা এবং উভয় পাশে দুটি করে তারকা ।
রূপকার: কামরুল হাসান ।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মনোগ্রাম |
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মনোগ্রাম
বর্ণনা:
লাল রংয়ের বৃত্তের মাঝে হলুদ রঙের বাংলাদেশের মানচিত্র । বৃত্তের উপরের দিকে লেখা
আছে “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ”, নিচে লেখা “সরকার” । বৃত্তের পাশে দুটি করে মোট
চারটি তারকা । ডিজাইনার: এম এন সাহা ।
অন্য পোস্টঃ
- অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন | ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন
- হযরত আলী রাঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী | Short Biography of Hazrat Ali
- টেলিটক সিমের ইমারজেন্সি ব্যালেন্স কোড | Teletalk Emergency Balance Code
বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধ
বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধ (অন্য নাম সম্মিলিত প্রয়াস) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত স্মারক স্থাপনা । এটি ঢাকা শহরের উপকণ্ঠে সাভারের নবীনগরে অবস্থিত ।
বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধ |
স্মৃতিসৌধ এর স্থপতি হলেন সৈয়দ মাইনুল হোসেন । স্মৃতিসৌধটির উচ্চতা ১৫০
ফুট (৪৬.৬ মিটার) । স্মৃতিসৌধটিতে সাতটি ত্রিভুজাকৃতির দেয়াল দিয়ে গঠিত ।
স্মৃতিসৌধ এলাকাটি ১০৯ একর জুড়ে বিস্তৃত ।
১৯৫২
এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৬ এর ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন,
১৯৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ এর ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ এর
মুক্তিযুদ্ধ - এই ঘটনাকে স্বাধীনতা আন্দোলনের পরিক্রমা হিসাবে বিবেচনা করে সৌধটি
নির্মিত হয়েছে ।
১৯৭২
সালের ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতিসৌধটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
করেন । ১৯৮২ সালের ১৬ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ এর
উদ্বোধন করেন ।
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত
“আমার
সোনার বাংলা” …………… । এ গানের রচয়িতা ও সুরকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । ১৯০৫ সালে
বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গানটি রচিত হয়েছিল । গানটিতে বাংলার প্রকৃতির
কথা প্রধানভাবে স্থান পায় । ১৩১২ বঙ্গাব্দে (১৯০৫ সাল) “বঙ্গদর্শন” পত্রিকা
আশ্বিন সংখ্যায় গানটি প্রথম প্রকাশিত হয় । গানটি রবীন্দ্রনাথের “গীতবিতান”
গ্রন্থের স্বরবিতান অংশভুক্ত ।
চলচ্চিত্রকার
জহির রায়হান ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তার বিখ্যাত “জীবন থেকে নেওয়া”
কাহিনীচিত্রে এই গানের চিত্রায়ন করেন । ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ তারিখে পল্টন ময়দানে
ঘোষিত স্বাধীনতার ইশতেহারে এই গানকে জাতীয় সংগীত হিসেবে ঘোষণা করা হয় । ১৯৭২
সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর বাংলাদেশের সংবিধানে এই গানকে জাতীয় সংগীতের
মর্যাদা দেওয়া হয় ।
এটি
ছিল মূলত একটি কবিতা । ২৫ চরণ বিশিষ্ট এই কবিতার প্রথম ১০ চরণ বাংলাদেশের জাতীয়
সংগীত । তবে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে প্রথম ৪ চরণ বাজানো হয় । গানটির ইংরেজি অনুবাদ
করেন সৈয়দ আলী আহসান ।
বাংলাদেশের জাতীয় বিষয়াবলী অন্যান্য
জাতীয়
রণসঙ্গীত (War song): চল্ চল্ চল্ (কাজী নজরুল ইসলাম) ।
জাতীয়
ভাষা (National language): বাংলা (Bangla) ।
জাতীয়
কবি (National poet): কাজী নজরুল ইসলাম (Kazi Nazrul Islam) ।
জাতীয়
পাখি (National bird): দোয়েল (Magpie Robin) ।
জাতীয়
পশু (National animal): রয়েল বেঙ্গল টাইগার (Royal Bengal Tiger) ।
জাতীয়
মাছ (National fish): ইলিশ (Hilsa) ।
জাতীয়
ফুল (National flower): শাপলা (Water lily) ।
জাতীয়
ফল (National fruit): কাঁঠাল (Jackfruit) ।
জাতীয়
বৃক্ষ (National tree): আম গাছ (Mango tree) ।
জাতীয়
ধর্ম (National religion) : ইসলাম (Islam) ।
জাতীয়
বন (National Forest): সুন্দরবন (Sundarban) ।
জাতীয়
মসজিদ (National mosque): বায়তুল মোকাররম, গুলিস্তান ঢাকা ।
জাতীয়
স্টেডিয়াম (National stadium): বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, গুলিস্তান, ঢাকা ।
জাতীয়
গ্রন্থাগার (National Library) : শেরে বাংলা নগর, আগারগাঁও, ঢাকা ।
জাতীয়
পার্ক (National Park): ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক, গাজীপুর ।
জাতীয়
জাদুঘর (National Museum): জাদুঘর, শাহবাগ, ঢাকা ।
জাতীয়
খেলা (National game): কাবাডি (Kabaddi) ।
জাতীয় নাট্যশালা: শিল্পকলা একাডেমি, সেগুনবাগিচা, ঢাকা ।
এই রকম আরো পোস্ট পেতে চাইলে “জিনিয়াস বাংলা ব্লগ” এর কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে আমাদের জানিয়ে দিন । আমরা আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী লেখা পোস্ট করার চেষ্টা করবো ।
অন্য পোস্টঃ দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম | বিদেশে টাকা পাঠানোর নিয়ম