হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাঃ এর জীবনী | Biography of Hazrat Abu Bakr Siddique

হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাঃ এর জীবনী | Biography of Hazrat Abu Bakr Siddique - মক্কার বিখ্যাত কুরাইশ বংশে হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাঃ (আরবি: أبو بكر الصديق‎‎) ২৭ অক্টোবর ৫৭৩ খ্রিষ্টাব্দ জন্মগ্রহণ করেন । 

তার বাল্য নাম ছিল আব্দুল্লাহ । আবু বক্কর ছিল তার ডাকনাম । তিনি ছিলেন হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একজন প্রধান সাহাবি, ইসলামের প্রথম খলিফা এবং প্রথম ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে অন্যতম । ইসলাম গ্রহণ করার পর তিনি সিদ্দিক অর্থাৎ “সত্যবাদী” খেতাব লাভ করেছিলেন ।

আরও পড়ুনঃ মহান আল্লাহর ৯৯টি নাম ও তার অর্থ

হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাঃ এর জীবনী

আরও পড়ুনঃ হযরত আলী রাঃ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী | Short Biography of Hazrat Ali

বন্ধুরা, আজকের ব্লগ পোস্টে ইসলামের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাঃ এর জীবনী নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো । যিনি মহা নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর একজন প্রিয় এবং কাছের সাহাবি ছিলেন । আশা করি এই ব্লগ পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে ।

হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর পিতার নাম ছিল ওসমান । কিন্তু ইতিহাসে তিনি আবু কুহাফা নামেই সুপরিচিত ছিলেন । হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর মাতার নাম উম্মুল খায়ের সালমা । আবু বকর (রাঃ) পিতা মাতা উভয়ই বিখ্যাত কুরাইশ বংশের তায়িম গোত্রের ছিলেন । হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর মা প্রথমদিকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন ।

কিন্তু হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর পিতা হিজরীর অষ্টম বছরের ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন । হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর স্ত্রী কুতাইলা বিনতে আব্দুল উজ্জা ইসলাম গ্রহণ করেননি । তাই হযরত আবু বকর (রাঃ) তাকে তালাক দিয়েছিলেন ।

হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর অন্য স্ত্রী উম্ম রোমান ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন । তার ছেলে আব্দুর রহমান ইবনে আবি বকর ছাড়া অন্য সবাই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন । এর ফলে আবু বকর (রাঃ)-ছেলে আব্দুর রহমান ইবনে আবি বকর-এর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ ঘটে । উল্লেখ থাকে যে আবু বকর (রাঃ)-এর ছেলে আব্দুর রহমান ইবনে আবি বকর পরবর্তীকালে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন ।

হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ অনেককে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে অনুপ্রাণিত করেছে । তিনি তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণে উৎসাহ যোগান । তার দ্বারা উৎসাহিত হয়ে অনেকে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন । হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয় । মুজাহির ও আনসাররা নিজেদের মধ্য থেকে নেতা নির্বাচনের পক্ষে ছিল ।

কিছু গোত্র পুরনো প্রথা অনুযায়ী গোত্রভিত্তিক নেতৃত্ব ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায় । আনসাররা সাকিফা নামক স্থানে একত্রিত হয়ে এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করেন । এরপর হযরত আবু বকর (রাঃ), হযরত ওমর (রাঃ) এবং আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ এরা তিন জন সেখানে আগমন করেন ।

সভায় আলোচনার এক পর্যায়ে হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) আবুবকর (রাঃ)-এর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন । হযরত আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহও তার অনুসরণ করেন । এরপর বাকিরাও হযরত আবু বকর (রাঃ) কে নেতা হিসেবে মেনে নেন । সুন্নিরা আবু বক্কর (রাঃ) কে “খলিফাতুর রাসুল” বা “আল্লাহর রাসূলের উত্তরাধিকারী” বলে সম্মান করে থাকেন । হযরত আবু বকর (রাঃ) ছিলেন ইসলামের জন্য একজন শ্রেষ্ঠ উজ্জ্বল নক্ষত্র বলা চলে ।

হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর শাসনামলে ইসলাম ও জনগণের জন্য তিনি যুদ্ধ করেছেন । হযরত আবু বকর (রাঃ)-এর খিলাফত ২৭ মাস অর্থাৎ দুই বছরের কিছু বেশি সময় স্থায়ী ছিল । এই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে তাকে বেশকিছু অস্থিতিশীলতার সম্মুখীন হতে হয় । তবে তা তিনি সফলভাবে মোকাবেলা করেছিলেন । নতুন নবী দাবিকারী বিদ্রোহীদের তিনি রিদ্ধার যুদ্ধে দমন করেছিলেন ।

অন্য পোস্টঃ 

হযরত আবু বকর (রাঃ) বাইজেন্টাইন এবং সাসনীয় সম্রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন । যা ইসলামের ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেয় । পরবর্তী সময়ে হযরত ওমর (রাঃ) এবং হযরত উসমান (রাঃ) এই অভিযান অব্যাহত রেখেছিলেন । এইসব অভিযানের ফলে মুসলিম সাম্রাজ্য কয়েক দশকের মধ্যে শক্তিশালী হিসেবে আবির্ভূত হয় ।

ইসলামের প্রথম খলিফা হওয়ার পর হযরত আবু বকর (রাঃ) অন্যদের পরামর্শক্রমে তিনি তার কাপড়ের ব্যবসা ছেড়ে দেন । রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ভাতা গ্রহণ করতেন তিনি । এই মহান খলীফা শুধুমাত্র জীবিত অবস্থায় নয়, মৃত্যুর পরেও সবার চোখের মনি ছিলেন ।

৬৩৪ সালের ২৩ শে আগস্ট হযরত আবু বকর (রাঃ) অসুস্থ হয়ে পড়েন । অসুস্থতার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি বিছানায় শায়িত অবস্থায় থাকেন । হযরত আবু বকর (রাঃ) তার উত্তরসূরি মনোনীত করার জন্য প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন । যাতে তাঁর মৃত্যুর পর মুসলিমদের মধ্যে সমস্যা দেখা না দেয় ।

অন্যান্য সাহাবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি হযরত ওমর (রাঃ) কে তার উত্তরসূরি হিসেবে নিয়োগ দেন । ৬৩৪ সালের ২৩ শে আগস্ট হযরত আবু বক্কর (রাঃ) মারা যান । হযরত আয়েশার ঘরে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পাশে হযরত আবু বক্কর (রাঃ) কে দাফন করা হয় ।

হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাঃ কে নিয়ে প্রশ্নত্তোর

হযরত আবু বকর রাঃ এর প্রকৃত নাম কি?

হযরত আবু বকর রাঃ এর প্রকৃত নাম আবদুল্লাহ বিন আবি কুহাফা । তার বাল্য নাম ছিল আব্দুল্লাহ । আবু বক্কর ছিল তার ডাকনাম ।

আবু বকর রাঃ এর পিতার নাম কি?

আবু বকর রাঃ এর পিতার নাম ওসমান ইবন আমির ।

আবু বকর রাঃ এর মাতার নাম কি?

আবু বকর রাঃ এর মাতার নাম সালমা বিনতে সাখর ।

হযরত আবু বকর রাঃ এর স্ত্রী নাম কি?

হযরত আবু বকর রাঃ এর স্ত্রী নাম যথাক্রমে কুতাইলা বিনতে আবদুল উজ্জা (তালাকপ্রাপ্ত,)উম্ম রুমান, আসমা বিনতে উমাইস, হাবিবা বিনতে খারিজা ।

হযরত আবু বকর রাঃ কে ইসলামের ত্রাণকর্তা বলা হয় কেন

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয় । মুজাহির ও আনসাররা নিজেদের মধ্য থেকে নেতা নির্বাচনের পক্ষে ছিল । কিছু গোত্র পুরনো প্রথা অনুযায়ী গোত্রভিত্তিক নেতৃত্ব ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায় । আনসাররা সাকিফা নামক স্থানে একত্রিত হয়ে এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করেন ।

এরপর হযরত আবু বকর (রাঃ), হযরত ওমর (রাঃ) এবং আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ সেখানে আসেন । সভায় আলোচনার এক পর্যায়ে হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) আবুবকর (রাঃ)-এর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন । হযরত আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহও তার অনুসরণ করেন ।

এরপর বাকিরাও হযরত আবু বকর (রাঃ) কে নেতা হিসেবে মেনে নেন । সুন্নিরা আবু বক্কর (রাঃ) কে “খলিফাতুর রাসুল” বা “আল্লাহর রাসূলের উত্তরাধিকারী” বলে সম্মান করে থাকেন । হযরত আবু বকর (রাঃ) ছিলেন ইসলামের জন্য একজন শ্রেষ্ঠ উজ্জ্বল নক্ষত্র বলা চলে ।

হযরত আবু বকর রাঃ এর মৃত্যু কত সালে?

৬৩৪ সালের ২৩ শে আগস্ট হযরত আবু বক্কর (রাঃ) মারা যান । হযরত আয়েশার ঘরে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর পাশে হযরত আবু বক্কর (রাঃ) কে দাফন করা হয় ।


এই রকম আরো পোস্ট পেতে চাইলে “জিনিয়াস বাংলা ব্লগ” এর কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে আমাদের জানিয়ে দিন । আমরা আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী লেখা পোস্ট করার চেষ্টা করবো ।


অন্য পোস্টঃ টেলিটক সিমের ইমারজেন্সি ব্যালেন্স কোড | Teletalk Emergency Balance Code

Previous Post Next Post