কফির উপকারিতা অপকারিতা

কফির উপকারিতা অপকারিতা - কফি আমাদের অনেকেরই পছন্দের একটি পানিও । অনেকেরই সকাল বেলার প্রথম পানিও হচ্ছে এক কাপ কফি অর্থাৎ অনেকেই এক কাপ কফি দিয়ে তাদের সকালটা শুরু করেন । অনেকেই দিনে সাধারণত অনেকেই ৬ থেকে ৭ কাপ পর্যন্ত কফি পান করে থাকেন । কিন্তু আপনি কি জানেন কফি পান করার একটি সঠিক নিয়ম রয়েছে?

কফি যদি আপনি সঠিক নিয়মে পান করেন তাহলে কিন্তু আপনার একটি স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকবে । আবার অনেক সময় দেখা যায় কফি যদি অতিরিক্ত পান করা হয় তাহলে কিন্তু অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে ।

কফির উপকারিতা অপকারিতা
কফির উপকারিতা অপকারিতা

আজকের এই ব্লগ পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো কফির উপকারিতা অপকারিতা । এবার আসুন জেনে নিই যদি আপনি সঠিক নিয়মে কফি পান করেন তাহলে আপনার কি কি স্বাস্থ্য উপকারিতা বা অপকারিতা রয়েছে ---

কফির উপকারিতা

স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণায় দেখেছেন যে আপনি যদি দৈনিক ৪০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত কফি পান করেন তাহলে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো । এই পরিমাণ ক্যাফেইন আপনি যদি পেতে চান তাহলে ৩ থেকে ৪ কাপ পরিমাণ কফি পান করাই যথেষ্ট ।

আট আউন্স কফি পাউডার দিয়ে এই ৩ - ৪ কাপ কফি যদি দৈনিক আপনি পান করেন তাহলে কিন্তু আপনার অনেক রোগের ঝুঁকি কমে আসবে । যেমনঃ.........

১। পরীক্ষায় দেখা গেছে আপনি যদি নির্দ্দিষ্ট পরিমান কফি নিয়মিত পান করেন তাহলে আপনার ক্লোন ক্যান্সার এর ঝুঁকি কমে আসে ।

২। নিয়মিত কফি পানে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগের ঝুঁকি কমে আসে । কারণ কফি কিন্তু আপনার দেহের ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স এর অবস্থান সেটাকে সঠিক করে ।

৩। নিয়মিত কফি পানে আপনার এনজাইটি দূর করে এবং ডিপ্রেশন দূর করতে সাহায্য করে । এর ফলে আপনার দেহকে কফি এনার্জেটিক করে তোলে ।

কফি অ্যাড্রিনালিন হরমোনকে কাজ করতে সাহায্য করে এবং সাথে সাথে ডোপামিন সিক্রেশন করে আপনার এনার্জি লেভেলকে বাড়িয়ে তোলে ।

৪। অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে মানবদেহের মুড সুইংকে ঠিক করতে সহায়তা । করে অনেক সময় দেখা যায় অনেকে নার্ভাসনেসে ভুগে থাকেন, তখন কিন্তু এক কাপ কফি পান করলে এই সমস্যার দূর হয় ।

৫। নিয়মিত কফি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং টয়লেট ক্লিয়ার করতে সহায়তা করে । কারণ সে ক্ষেত্রে কফি ল্যাক্সাটিভ হিসেবে কাজ করে ।

৬। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের আপনি কিন্তু আগে থেকেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন যদি আপনি নিয়মিত কফি পান করেন ।

৭। প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততায় আপনি যদি শারীরিক দুর্বলতা বা অবসাদ গ্রস্থতা কাটাতে চান তাহলে আপনাকে এনার্জি দিবে এক কাপ কফি ।

৮। আপনার যদি হাটতে বা এক্সারসাইজ করতে দুর্বলতা অনুভব করেন তখন এক কাপ কফি পান করে হাঁটতে বা এক্সারসাইজ করতে যেতে পারেন । এতে কফি আপনাকে এক্সট্রা এনার্জি দিবে । কারণ আমরা জানি কফি মানবদেহে এ্যারোজেনিক ইফেক্ট তৈরি করে । এটা আপনার এক্সারসাইজের সক্ষমতা বাড়ায় ।

কফি কতটুকু খাওয়া উচিত?

এক মানুষের পক্ষে দিনে ৩ – ৪ কাপ পরিমান কফি পান করা উচিৎ । কফি আপনাকে একটি নির্দ্দিষ্ট নিয়মে পান করতে হবে । আপনি সকাল বেলা বা বিকেল বেলা পান করতে পারেন । তবে অতিরিক্ত পরিমান কফি যদি আপনি পান করেন তাহলে সেটা ক্ষতির কারন হতে পারে ।

কফির অপকারিতা

অতিরিক্ত কফি পান করার ফলে কেউ কেউ ক্ষতি সম্মুক্ষিণ হয়ে থাকেন । অতিরিক্ত কফি পানের ফলে কি কি অপকারিতা রয়েছে তা নিচে আলোচনা করা হলো -----

১। অতিরিক্ত কফি পানের ক্ষেত্রে দেখা যায় কারো কারো হাইপারটেনশন বা হাই প্রেসার হয়ে যায় । আবার কারো কারো বেলায় অ্যাংজাইটি বা ডিপ্রেশন এর পরিমানটা বেড়ে যায় ।

২। আপনি যদি আগে থেকেই এন্টি ডিপ্রেশন বা এন্টি অ্যাংজাইটি এর ঔষধ গ্রহন করে থাকেন তাহলে কফি কিন্তু আপনার জন্য নয় । যদি কফি গ্রহন করতেই হয় সেজন্য কফি একটি নির্দিষ্ট মাত্রা আপনাকে অবলম্বন করতে হবে ।

৩। অনেক সময় দেখা যায় কেউ কেউ ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রায় ভোগেন । যারা সেলফ ইনসোমনিয়ায় ভোগেন তাদের জন্য কফি পানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ।

যারা ইনসোমনিয়ার জন্য ঔষধ খাচ্ছেন বা যাদের রাতের বেলা ঘুম আসে না তাদের জন্য কফি নিষেধ কারণ । এ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে কফি পান করলে রাতের বেলা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে । যদিও দেখা যায় কফি দিনের বেলা আপনাকে এনার্জি দিবে কিন্তু রাতের ঘুম কেড়ে নেবে । এই ধরনের সম্ভাবনা থাকলে আপনাকে কফি পান থেকে বিরত থাকতে হবে ।

৪। কারো কারো অ্যাংজাইটির প্রবলেম থাকে । কেউ কেউ খুব তাড়াতাড়ি নার্ভাস হয়ে পড়েন । সেক্ষেত্রে কফি যদি পান করেন তাহলে আপনার উলটো ইফেক্ট হতে পারে । আপনি অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারে আরো বেশি পতিত হবেন । সেই জন্য কফির মাত্রা আপনার জন্য সঠিক কিনা সেটি যাচাই করে নিবেন ।

৫। অনেক সময় আমরা দেখে থাকি বেশি পরিমাণ কফি খেলে ডাইজেস্ট এর প্রবলেম হয় । অনেকের ক্ষেত্রে দেখা গেছে ২৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত যদি কফি পান করেন তাহলে তাদের কিন্তু ইরিটেবল বাওন্সিং অর্থাৎ ঘনঘন বাউল মুভমেন্ট এর প্রেসার চলে আসে ।

তো সে ক্ষেত্রে আপনার কিন্তু কফি পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে বা ১ থেকে ২ কাপ কফি পান করতে পারেন ।

কফি পানে সর্তকতা

কফি পানের ক্ষেত্রে কিছুটা সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত । অনেক সময় দেখা যায় আমরা অতিরিক্ত দুধ এবং চিনি মিশিয়ে কফি পান করি । সব থেকে ভালো হয় ইনস্ট্যান্ট কফি যদি এভয়েড করে গ্রাউন্ড কফি থেকে তৈরিকৃত এক কাপ কফি পান করেন তাহলে দেখা যাবে যে আপনার কফির যে স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে সেগুলো কিন্তু ভালোভাবে আপনি পাবেন ।

তাছাড়া কফি পানের ফলে কিন্তু আপনার স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে । তাই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে অর্থাৎ আপনার পুষ্টিবিদের সাথে এক সাথে বসে ঠিক করে নিন আপনার কফির মাত্রা কতটুকু হবে এবং আপনি কতটুকু পরিমান কফি খেলে আপনার কোন প্রকার সমস্যা হবে না ।

বন্ধুরা, আপনাদের সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের ব্লগপোস্ট এখানেই শেষ করছি । আগামীতে যদি এরকম আরো পোস্ট পেতে চান তাহলে আমাদের জিনিয়াস বাংলা ব্লগ এ কমেন্ট করে জানিয়ে দিন । আমরা আমাদের সাধ্যমত আপনাদের চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করব । আল্লাহ হাফেজ ।।

Previous Post Next Post