খেজুরের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা | খেজুরের গুড় নিয়ে
বিস্তারিত - খেজুরের গুড় একধরনের মিষ্টান্ন দ্রব্য যা মুলত খেজুর গাছের রস থেকে তৈরি
করা হয় । বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী অগ্রহায়ণ মাস থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত খেজুর গাছ
থেকে রস সংগ্রহ করা হয় । খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে পরবর্তিতে আগুনের উত্তপে রসকে ঘন
এবং শক্ত গুড়ে রুপান্তরিত করা হয় ।
খেজুর গাছের রস এবং রস দিয়ে তৈরি গুড় খেতে খুবই সুস্বাদু
। শীতকালে খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পায়েস, বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন পিঠা,
খেজুর গুড়ের জিলাপি ইত্যাদি তৈরি হয়ে থাকে । বন্ধুরা, আজকের ব্লগ পোস্টে খেজুরের
গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো ।
আরও পড়ুনঃ রুই মাছের উপকারিতা | রুই মাছ
আরও পড়ুনঃ মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা কি | মাশরুমের স্বাস্থ্য উপকারিতা
খেজুরের গুড়ের প্রকার ভেদ
তৈরির ধরন অনুযায়ী খেজুরের গুড়কে চিটাগুড়, পাটালি গুড়, দানাগুড় ও ঝোলা গুড় ইত্যাদি ভাগে ভাগে ভাগ করা যায় । স্বাদ আর মানভেদে খেজুরের গুড় হাজারী গুড়, নলেন গুড় ও পাটালি গুড় নামে পরিচিত ।
বাটালি গুড় | পাটালি গুড়
খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করার পর চুলায় জালানোর মাধ্যমে
ঘন করে গুড়ে পরিনত করা হয় । এরপর আরও ঘন করে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় এই গুড়কে বিভিন্ন
রকমের ছাচে ফেলে শক্ত পাটালি গুড়ে পরিনত করা হয় । এরপর এটিকে সংরক্ষন করা হয় এবং বাজারজাত
করা হয় ।
নলেন গুড় অর্থ | নলেন গুড়
নলেন শব্দের অর্থ হচ্ছে নতুন । খেজুর গাছের রস প্রথম
অবস্থায় সংগ্রহ করার পর যে গুড় তৈরি হয় তাকে নলেন গুড় বা নতুন গুড় বলে । এই নলেন গুড়
খেতে অনেক সুস্বাদু ।
হাজারী গুড়
এই হাজারী গুড় সাধারণত মানিকগঞ্জ এলাকায় তৈরি হয় । হাজারী
গুড় তৈরির জন্য মানিকগঞ্জ এলাকা বিখ্যাত । এই গুড়ের প্রধান বৈশিষ্ট হচ্ছে এটি দুহাতে
গুড়া করে ফু দিলে বাতাসে উড়ে যায় । এই গুড় তৈরি করতে মিষ্টি এবং টাটকা রসের প্রয়োজন
। খেজুরের গুড়ের মধ্যে হাজারী গুড় দেখতেও যেমন সুন্দন তেমনি খেতেও অনেক সুস্বাদু ।
এর জন্য এর দামটাও অনেটা বেশি । এই গুড় প্রতি কেজি ৬০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত
বিক্রয় করা হয় ।
ভেলি গুড় | চিটে গুড়
খেজুরের রস থেকে চিনিও তৈরি করা যায় । সাধারনত গুড়ের
চিনি কম মিষ্টি হলেও অনেক পুষ্টিকর । খেজুরের রস থেকে চিনি করার জন্য দুই বার ফোটালে
ঘন কালো রঙের তিতকুটে স্বাদ যুক্ত ভেলি গুড় থাকে । আরও বেশি চিনি বের করে নিলে বাদবাকি
তলানি যা থাকে তাকে চিটে গুড় বলে । এই গুড়েও প্রচুর ভিটামিন থাকে কিন্তু স্বাদ তেতো
হওয়াতে এগুলো গরুর খাবার হিসাবে ব্যবহৃত হয় ।
খেজুরের গুড়ের প্রাপ্তিস্থান
ভারতের কিছু এলাকায় এবং বাংলাদেশের প্রায় সব এলাকায়
খেজুরের গুড় পাওয়া যায় । বাংলাদেশের বৃহত্তর যশোর, ফরিদপুর, সাতক্ষীরা এবং ভারতের নদীয়া
জেলার কিছু অংশ এবং বসিরহাট, চব্বিশ পরগনা এলাকায় এক সময় ব্যাপক আকারে খেজুর গাছের
রস উৎপাদন করা হতো ।
শীত ও খেজুরের গুড়
শীতের আমেজ শুরু হতেই গ্রাম বাংলায় শুরু হয় খেজুরের
রসের মৌসুম । শীত যত বাড়তে থাকবে খেজুরের রস তত মিষ্টি হতে শুরু করবে । শীতের সময় সকাল
বেলায় চলে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া আর সন্ধ্যায় সন্ধ্যা রস খাওয়ার আসর বসে
। প্রাচীন কাল থেকে গ্রাম বাংলায় পিঠা, পায়েস তৈরিতে খেজুরের গুড় ওতোপ্রোত ভাবে জড়িত
।
খেজুরের গুড় English
খেজুরের গুড় এর ইংরাজী হচ্ছে Date Molasses.
খেজুর গুড় চেনার উপায়
👉 যখন খেজুরের গুড় কিনবেন তখন একটু গুড় মুখে দিয়ে দেখুন,
যদি নোনতা স্বাদ হয় তাহলে বুঝতে হবে গুড় আসল নয় বা ভেজাল আছে ।
👉 পাটালি গুড় কেনার সময় গুড়ের দুইধার আঙুল দিয়ে চাপ দিন
যদি নরম হয় তাহলে খাঁটি আর যদি শক্ত হয় তাহলে বুঝবেন এর মধ্যে ভেজাল আছে ।
👉 সাধারণত গুড়ের রং গাঢ় বাদামি রংয়ের হয়ে থাকে । যদি গুড়ের
রং হলুদ হয় তাহলে বুঝবেন এত কেমিকেল মেশানো হয়েছে ।
👉 খেজুরের গুড় কেনার সময় ভালো ভাবে লক্ষ করবেন যে, যদি
দেখেন যে গুড়ের রং সাদাটে হয় তাহলে বুঝবেন ঐ গুড়ে প্রচুর চিনি মেশানো হয়েছে ।
👉 খেজুরের গুড় যদি তিতা স্বাদের হয় তাহলে বুঝবেন অনেক
জ্বালানো হয়েছে । এই গুড় না কেনাই ভালো কারণ এটি দিয়ে কিছু তৈরি করলে তা ভালো হবে না
।
খেজুরের গুড়ের পুষ্টি উপাদান |
খেজুরের গুড়ের পুষ্টি উপাদান
খেজুরের গুড়ে রয়েছে আয়রন, ফসফরাস, ক্যলসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,
পটাসিয়াম, কপার, জিঙ্ক, ভিটামিন বি এবং ভিটামিন সি । খেজুরের গুড়ে চিনির থেকে ক্যালরির
পরিমান কম । খেজুরের গুড় অ্যান্টি-ফ্যাট । খেজুরের গুড় উচ্চ ক্যালরি যুক্ত তাই শীতের
সময় খেলে তেমন সমস্যা হয় না । কারন গুড় মানব শরিরে তাপ বৃদ্ধি করে এবং শরিরের তাপ ধরে
রাখতে সহায়তা করে । তবে গরমের সময় খেজুরের গুড় বেশি না খাওয়াই ভালো ।
খেজুরের গুড় কিভাবে তৈরি করে | খেজুরের গুড় তৈরি
খেজুরের রস গাছ থেকে পেড়ে বেশিক্ষন রেখে দিলে তা নষ্ট
হয়ে যায় । তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করতে হবে । প্রথমে
খেজুরের রস ছেকে একটি বড় পাত্রে ঢেলে চুলায় জ্বাল দিতে হয় । জ্বাল দিতে দিতে এক সময়
এটি ঝোল গুড়ে পরিনত হয় । যদি পাটালি তৈরি করতে হয় তাহলে এই গুড় আরো জ্বাল দিয়ে আরো
ঘন করে কলা পাতা বা ছাঁচে ঢেলে দিতে হয় । পরে এটি ঠান্ডা হলে পাটালিতে রুপান্তরিত হয়
।
গুড় খাওয়ার নিয়ম
খেজুরের গুড় আপনি স্বাভাবিক নিয়মে খেতে পারবেন । তবে
খাওয়ার পর খেলে ভালো হয় । খেজুরের গুড়ের পায়েস, পিঠা যে কোনো সময় খেতে পারেন । যদি
যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন তবে এটি না খাওয়াই ভালো । কারন এতে আপনার সুগার লেভেল বেড়ে
যেতে পারে ।
খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত কোন জেলা | যশোরের খেজুরের গুড়
বাংলার প্রবাদে আছে “যশোরের যশ খেজুরের রস” । বাংলাদেশের
যশোর এলাকা প্রাচীন কাল থেকেই খেজুরের রস এবং গুড়ের জন্য বিখ্যাত । এই অঞ্চলের গুড়ের
চাহিদা দেশের মধ্যে এবং দেশের বাইরেও ব্যপক । গুড় এবং পাটালি তৈরিতে এই অঞ্চরের গাছিরা
বেশ পটু । এরা দানা পাটালি তৈরিতে বেশ পারদর্শি । বাংলাদেশের আর কোথাও এমন পাটালিগুড়
তৈরি হয় না বললেই চলে । যশোর এলাকার গাছিরা শীত আসতেই খেজুর গাছ পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত
হয়ে পড়ে ।
খেজুরের গুড়ের দাম
খেজুরের গুড়ের দাম প্রকার ভেদে একেক রকম । যেমন –
👉 পাটালিগুড় প্রতি কেজি – ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা,
👉 ঝোলগুড় বা দানাগুড় প্রতি কেজি – ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা,
👉 হাজারীগুড় প্রতি কেজি – ৬০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা,
👉 চিটাগুড় প্রতি কেজি – ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত
হয়ে থাকে ।
আজকাল অনলাইনেও গুড় বিক্রয় করা হয় । অনলাইনে বিভিন্ন
দামে খেজুরের গুড় বিক্রি হয় ।
খেজুরের গুড় সংরক্ষণ পদ্ধতি
খেজুরের গুড়ের প্রধান সমস্যা হলো গুড় ফাংগাসে আক্রান্ত
হয় । যদি গুড় ফাংগাস মুক্ত রাখা যায় তাহলে দির্ঘ্যদিন সংরক্ষন করা যায় । নিন্মে গুড়
সংরক্ষনের কিছু উপায় বর্ননা করা হলো ---
👉 স্বাভাবিক ভাবে চিনা মাটির (সিরামিক) পাত্রে গুড় রেখে
দিলে অনেক দিন ভালো থাকে ।
👉 প্লাস্টিকের পাত্রে গুড় রেখে কিছুদিন পর পর রোদে দিলে
গুড় ফাংগাস মুক্ত থাকে ।
👉 কাচের পাত্রে ফ্রিজে গুড় সংরক্ষন করলেও গুড় দির্ঘ্যদিন
ভালো থাকে ।
👉 মাটির পাত্রে গুড় রেখে পাত্রর মুখ ভালো ভাবে বেঁধে শীতল
স্থানে সংরক্ষন করলে গুড় দির্ঘ্যদিন ভালো থাকে ।
খেজুরের গুড় ডায়াবেটিস
গুড় চিনির মতোই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর । বিশেষজ্ঞ
ডাক্তারদের মতে, গুড় খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের শরিরে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে গিয়ে ক্ষতি
হতে পারে । গুড়ে খাকা সুক্রোজ শরিরের সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় । চিনি যেমন শরিরে
খাওয়ার সাথে সাথেই শোষন হয় কিন্তু গুড় শরিরে শোষন হতে বেশ সময় লাগে । অনেক ডায়াবেটিস
রোগী মনে করেন চিনির বদলে গুড় খাওয়া নিরাপদ আসলে তা মোটেও সঠিক নয় ।
খেজুরের গুড়ের ছবি
খেজুরের গুড়ের ছবি |
খেজুরের গুড় খাওয়ার উপকারিতা
সৃষ্টিকর্তা যে খাবারটি আমাদের জন্য দিয়েছেন তার প্রত্যেকটির
কিছু না কিছু উপকারিতা আছে । তেমনি খেজুরের গুড়ের উপকারিতাও আছে বেশ ।
প্রাচীনকাল থেকে এই বাংলায় খেজুরের গুড়ের প্রাপ্যতা
অনেক । খেজুরের গুড়ের অনেক উপকারিতা রয়েছে । আমরা হয়তো খেজুরের গুড় কোনো কিছু না জেনেই
খাই । কিন্তু আমরা যদি এর উপকারিতাটা জেনে খাই তাহলে আরো ভালো হয় । তাহলে চলুন জেনে
নিই খেজুরের গুড় খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে ---
কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়
উপরে এক জায়গায় লিখেছি কোষ্ঠকাঠিন্য
বাড়ায় । সেটা যদি অনেক বেশি পরিমান খান প্রতিদিন । অথচ এই গুড় যদি আপনি অল্প পরিমান
খান তাহলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য কমতে সাহায্য করবে । কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে এক চামচ খেজুরের
গুড় খান প্রতিদিন ।
লিভার ভাল রাখে
প্রতিদিন যদি আপনি এক চামচ খেজুরের
গুড় খান তাহলে আপনার লিভার থেকে দুষিত টক্সিন বের হয়ে যাবে । টক্সিন বের হয়ে যাওয়ার
ফলে আপনার শরির সুস্থ থাকবে ।
সর্দি-কাশি নিরাময় করে
খেজুরের গুড় সর্দি-কাশিও সারাতে
সহায়তা করে । সর্দি অথবা কাশি হলে একটু গুড় খেয়ে দেখুন । স্বস্তি পাবেন ।
রক্ত পরিষ্কার রাখে
গুড় যেহেতু লিভার থেকে বিষাক্ত
টক্সিন বা উপাদান বের করে দেয়, সে কারনে জন্য রক্তও থাকে পরিস্কার ।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
গুড় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমাত
বাড়াতে সাহায্য করে । গুড় যেহেতু আপনার রক্ত পরিশোধন করে সেহেতু আপনার শরিরের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতাও বৃদ্ধি করবে ।
যে সব মহিলাদের মাসিক প্রিয়ডের
সময় পেটে ব্যথা হয় গুড় সেই ব্যথা কমাতে সাহায্য করে । আপনার যদি এই সমস্যা থাকে তাহলে
গুড় খেয়ে দেখতে পারেন । দেখবেন অনেকটাই স্বস্তি পাবেন ।
রক্ত বৃদ্ধি করে
গুড়ে আছে প্রচুর পরিমান আয়রন । যে
কারনে রক্তে হিমোগ্লেবিনের পরিমান বৃদ্ধি করে । এর ফলে রক্তাল্পতা রোধে সাহায্য করে
।
মিনারেলের ঘাটতি পুরন করে
খেজুরের গুড় শরীরের মিনারেলের
ঘাটতি পূরণ করে । ১০ গ্রাম খেজুরের গুড় প্রায় ১৬ মিলিগ্রাম মিনারেল এর জোগান দিয়ে
থাকে ।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রক
গুড়ে থাকে সোডিয়াম আর পটাসিয়াম,
যা ব্লাড প্রেসার কমিয়ে শরিরের ভারসাম্য বজায় রাখে ।
শ্বাসকষ্ট কমায়
গুড় যেহেতু শরীর গরম রাখে, সেহেতু
শ্বাসকষ্টেও স্বস্তি মেলে । অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিসের মতো অসুখে রোজ গুড় খেলে বেশ উপকার
পাওয়া যায় ।
ক্লান্তি নিরোধক
গুড় রক্ত পরিষ্কার করে, শ্বাসকষ্ট
কমিয়ে এবং শরীরকে রাখে ঝরঝরে । ফলে, কর্মক্ষমতা যেমন বাড়ে, তেমনই ক্লান্তিও কমে ।
মাইগ্রেনের সমস্যা কমায়
গুড় মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে
বেশ উপকারি ।
ভিটামিনের জোগন দেয়
খেজুরের গুড়ে থাকে না না রকম খনিজ
পদার্থ এবং আরও থাকে নানা রকম ভিটামিন । আর সে কারনে শীত কালে গুড় খেলে কাজ করার শক্তি
যোগায় । সেই সাথে হজমের সমস্যাও দুর হয় ।
খেজুর গুড়ের অপকারিতা
ওজন বাড়তে পারে
যেহেতু শীতের সময় খেজুরের গুড় একটি
লোভনীয় খাদ্য । এটার লোভ অনেকেই সামলাতে পারেন না । কিন্তু আপনি জানেন কি? প্রতি ১০০
গ্রাম গুড়ে রয়েছে ৩৮৫ ক্যালোরি । তাই যারা ওজন কমানোর উদ্দেশ্যে ডায়েট কন্ট্রল করছেন
তাদের গুড় বেশি খাওয়া ঠিক নয় । এতে আপনার ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে ।
বাড়বে ব্লাড সুগার
গুড় যদিও চিনির থেকে ভালো তার মানে
এই নয় যে আপনি বেশি করে গুড় খাবেন । প্রতি ১০০ গ্রাম গুড়ে ৯৭ গ্রাম সুগার রয়েছে । যা
আপনার শরিরের ব্লাড সুগারকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে ।
প্যারাসাইটিক বা পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা
আপনি যে গুড় খাচ্ছেন তা যদি সুন্দর পরিবেশের বদলে নোংরা পরিবেশের তৈরি হয় তাহলে আপনার
পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে । আমরা অনেক সময় দেখে থাকি গুড় নোংরা পরিবেশে
খোলা অবস্থায় রাখা হয় । আর সে সময় বিভিন্ন মশা মাছি দ্বারা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা
জিবানু গুড়ে মিশে যেতে পারে । যার ফলে আপনার শরিরে অসুখ বাসা বেধে স্বাস্থের ক্ষতি
করতে পারে । তাই গুড় কেনার সময় এই ব্যপারটি লক্ষ রাখুন ।
হতে পারে বদহজম
অনেক দিনের পরাতন গুড় খেলে ডায়রিয়ায়
আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে । প্রতিদিন গুড় খেলে কোষ্টকাঠিন্য হতে পারে ।
হতে পারে নাক থেকে রক্তপাত
গরমের সময় বেশি গুড় খেলে
আপনার নাক থেকে রক্তপাত হতে পারে । সে কারনে গরমের সময় বেশি গুড় না খাওয়াটাই ভালো ।
স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে
গুড়ে সুক্রোজের
পরিমান বেশি থাকে । আপনার যদি গাঁটে ব্যাথা থাকে তাহলে এটি না খাওয়াই উচিত । এক গবেষনায়
দেখা গেছে আপনার দৈনীক খাবারে যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে তার সাথে সুক্রোজ মিশে
গাঁটে ব্যাথা আরও বৃদ্ধি হতে পারে ।
অন্যান্য সমস্যা
আপনি যদি মলাশয়ের সমস্যা যেমন – পাইলসের সমস্যায় ভোগেন তাহলে গুড় না খাওয়াই ভালো । গুড় খাওয়ার ফলে এ সমস্যা আরও বাড়তে পারে ।
এই রকম আরো পোস্ট পেতে চাইলে “জিনিয়াস বাংলা ব্লগ” এর কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে আমাদের জানিয়ে দিন । আমরা আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী লেখা পোস্ট করার চেষ্টা করবো ।